নেত্রকোনার মদনে উদ্বোধনের আগেই সেতুর এ্যাপ্রোচ ভেঙে গেল

নেত্রকোনার মদনে এলজিইডি প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন মদন-তাড়াইল সড়কের বর্ণি নদীর ওপর নির্মাণ করা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার আগেই চার পাশের এপ্রোচ ভেঙ্গে পড়েছে। তবে সেতু নির্মাণের শুরু থেকেই ঠিকাদারের অনিয়মের কারণেই এমন অবস্থা বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে আসছে। ৭ মাসও হয়নি এর মধ্যেই ভেঙ্গে যাচ্ছে এ্যাপ্রোচ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ১৪০ মিটার দৈর্ঘ্য বর্ণি নদীর ওপর মূল সেতুর কাজ শেষ। যানবাহন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। সেতুর চার পাশের বিভিন্ন স্থানে এ্যাপ্রোচ কাঠামোতে বড় বড় ফাটল। অনেকাংশে ঢালাইয়ের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে (এপ্রোচ) ভেঙ্গে নদীতে চলে গেছে।

২০২৪ সালের ফেব্রæয়ারীতে সেতুটির কাজ শেষ করে ঠিকাদার। গত ৭ মাসেই সেতুর চার অংশেই এ্যাপ্রোচ ধসে ঝুঁকির রয়েছে এ সেতুটি। সেতুর স্থানীয়ত্বকাল নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মদন উপজেলার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার মদন উপজেলা ও কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সংযোগ সড়কে ধানকুনিয়া গ্রামের পাশের বর্ণি নদীতে সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। দুই উপজেলার দাবির প্রেক্ষিতে সেতুটির গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত এর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

কিশোরগঞ্জের পি পি এল চ্যালেঞ্জার নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজ পায়। সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়ে ছিল ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ৮ই মার্চ কাজ শুরু করে ৫৪০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। গাফিলতির কারনে নিদিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। ২০২৪ সালের ফেব্রæয়ারীতে সেতুটির কাজ শেষ করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রায় ৭-৮ মাস হবে সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। অথচ সেতুর এপ্রোচ এখনই ভেঙ্গে পড়ছে। এই সেতুটি নির্মাণ কাজে শুরু থেকেই অনিয়ম করে ঠিকাদার। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলণ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে।

আমরা কথা বললে আমাদেরকে হুমকি ধামকি দেয়। নেত্রকোনার মদন অংশের এ্যাপ্রোচে নিম্নমানের আকারে ছোট-বড় ভাঙাচোরা বক্ল বসানোর সময় আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। এ সময়ও আমাদেরকে হুমকি ধামকি দেয়। এলজিডির লোকজনকে অবগত করা হলে তারাও কোন গুরুত্ব দেয়নি।

তদারকিতে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা থাকায় ঠিকাদার তাদের ইচ্ছে মতো কাজ শেষ করে গেছে। এই নিন্মমানের কাজ করায় সেতুর এ্যপ্রোচ ৭ মাসেই ধসে গেছে। সেতুটি এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের পি পি এল চ্যালেঞ্জার নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যানেজার কৃত্তিবাসের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলে রিসিভ না করায় তার মতামত দেয়া সম্ভব হয়নি।

মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল জানান, সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ফেব্রুয়ারী মাসে। এ্যাপ্রোচের ব্ক্ল সড়ে গেছে আমরা সরজমিনে পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদারকে বলেছি দ্রুত এ্যাপ্রোচের কাজ সমাধান করার জন্য। তাদের অনেক বিল বাকি রয়েছে। সেতুর এ্যপ্রোচ ঠিক করার পর সমস্ত বিল দেয়া হবে।