নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী ও বিদ্রোহীদের সাথে কথা বলতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ
নড়াইলে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ নড়াইলে আসছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও
জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করতে এবং বিদ্রোহীদের সঙ্গে কথা বলতে।
আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়,
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, নড়াইল-১
আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তি, নাড়ইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি বিন মুর্তজাসহ জেলা ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত থাকবেন।
জানা গেছে, নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আ’লীগ মনোনীত অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, লোহাগড়া উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান
সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু এবং নড়াইল জেলা পরিষদ প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) জেলা পরিষদ সদস্য আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে যুক্ত মো.সুলতান মাহমুদ।
এদিকে ২০২১ সালে ইউপি নির্বাচনে জেলার ৩৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৭টি ইউপি নির্বাচনে আ’লীগ মনোনীত ১৭জন প্রার্থী জয়লাভ করেন। বাকি ১৬টিতে আ’লীগ
বিদ্রোহী,২জন বিএনপি সমর্থক,১জন ওয়ার্কার্স পার্টি এবং ১জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার ৫৫২জন। অনেকেই ধারণা করছেন এসব বিদ্রোহী চেয়ারম্যান ও তাদের দ্বারা প্রভাবিত ইউপি মেম্বররা নির্বাচনে একটি ফ্যাক্টর হতে পারেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর জেলা আ’লীগ কার্যালয়ে দলীয় এক মতবিনিময় সভায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও কলাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান (আ’লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী) আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান কায়েস সভায় বলেন, আমরা যারা বিদ্রোহী হিসেবে জয়লাভ করেছি তাদের আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ রকম বিদ্রোহী জনপ্রতিনিধির সংখ্যা অনেক। তারা যদি দলীয় প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে অন্য প্রার্থীকে ভোট দেয় তাহলে ফলাফল পরিবর্তন হতে পারে। বিদ্রোহী প্রার্থী লোহাগড়া উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু বলেন, জনগন ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা আমাকে দাড়িয়ে দিয়েছে। আমি তাদের জন্য নির্বাচন করবো। তিনি জেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ
নেতৃত্বের সমালোচনা করে বলেন, আজ পরীক্ষীত নেতা-কর্মীদের দলে কোনো অবস্থান নেই। তারা আজ দলে কোনঠাসা। আমি তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে আসার পরও আমি কোনো কমিটিতে নেই।
প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করলে আওয়ামী লীগ থেকে যদি বহিষ্কার করা হয় এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সারা দেশে অসংখ্য বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক তখন ভেবে দেখবো। আপনি বা আপনার লোকজন টাকা দিয়ে ভোট কিনবেন এ ধরণের অভিযোগ রয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার ইনকাম ট্যাক্স ফাইল রয়েছে। আর আমার টাকার উৎস
কোথায়? এছাড়া আমার কোনো ব্যবসাও নেই। এ ধরনের কথাকে তিনি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন।
অপর বিদ্রোহী প্রার্থী মো.সুলতান মাহমুদকে নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে একাধিকবার ফোন করলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নড়াইলের সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, আমি জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবে কাজ করার সময় সততা ও দক্ষতার পরিচয়
দিয়েছি। নড়াইলের অনেক উন্নয়ন করেছি। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে জয় সুনিশ্চিত বলে মন্তব্য করেন। এছাড়া তিনি বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলের প্রতি
অনুগত থেকে নড়াইলের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা উচিত বলে মন্তব্য করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু বলেন, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বসবেন। পরবর্তীতে দুই এমপির উপস্থিতিতে বিদ্রোহী
দু’প্রার্থীকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য বলা হবে। এরপর তারা যদি না বসে তাহলে পরবর্তীতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তিনি বিদ্রাহী বসে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, জেলা পরিষদ প্রশাসক।(ভারপ্রাপ্ত) জেলা পরিষদ সদস্য মো.সুলতান মাহমুদ জেলা পরিষদের পদ থেকে
পদত্যাগ করে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এছাড়া জেলা পরিষদ সদস্য পদে সংরক্ষিত-১ আসনে ৪জন, সংরক্ষিত-২ আসনে ৩জন, সাধারণ-১ আসনে ৫জন, সাধারণ-২ আসনে ৫জন এবং সাধারণ-৩ আসনে ৪জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের
শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর। আগামি ১৭অক্টোবর জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন