নয় বছরেও হয়নি বেরোবির পূর্ণাঙ্গ সংবিধি-প্রবিধি
এইচ.এম নূর আলম, বেরোবি প্রতিনিধি : উত্তরবঙ্গের অক্সফোর্ডখ্যাত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিষ্ঠার নয় বছর পেড়িয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গভাবে তৈরি হয়নি শিক্ষা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ছুটি, পেনশনসহ অন্যান্য সংবিধি-বিধি-প্রবিধি। একাডেমিক কাউন্সিল, ব্যাচেলর ডিগ্রী প্রোগ্রাম, পরিবহন নীতিমালা প্রভৃতি হলেও রুপ পায়নি সংবিধি-প্রবিধিরুপে।
(অর্থাৎ বিধি মোতাবেক কোনো নীতিমালা সংবিধি-প্রবিধি’র রুপ পেতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সুপারিশ ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রয়োজন পড়ে)। তবে সংবিধি-প্রবিধি প্রণয়নে বর্তমান উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ,বিটিএফও উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বলে আজ বুধবার মুঠোফোনে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর ।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ২০০৯ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদকর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেট এর ২০০৯ সনের ২৯ নং আইন দ্বারা পরিচালিত। বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৩৯ নং ধারাতে সংবিধি প্রণয়নের অনুচ্ছেদে (২ নং) বলা হয়েছে, ‘তফসিলে বর্ণিত সংবিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংবিধি হইবে।’ ৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সিন্ডিকেট কর্তৃক প্রণীত সকল সংবিধি অনুমোদনের জন্য চ্যান্সেলরের নিকট পেশ করিতে হইবে’ এবং ৪ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘চ্যান্সেলরকর্তৃক অনুমোদিত না হইলে সিন্ডিকেট এর প্রস্তাবিত কোনো সংবিধি বৈধ হবে না।’ ৪১ নং ধারাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি প্রণয়ন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সিন্ডিকেট, মঞ্জুরী কমিশনের সুপারিশক্রমে এবং চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি প্রণয়ন করিবে।’
৪০ নং বিধিতে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের ক্ষমতা ও ায়িত্ব নির্ধারণ ও ট্রেজারারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্ধারণের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ফাঁকা রয়েছে প্রো-ভিসির পটি। আর সাবেক উপাচার্য ড. একে এম নূর-উন-নবী যোগদানের ৫/৬ মাসের (২০১৩ সাল) মাথায় ট্রেজারার পদটি খালি হলেও সেটা পূরণ না করে নিজেই দখল করেছিলেন।
জানা গেছে, গত উপাচার্যের সময়ে পূর্ণাঙ্গ বিধি প্রণয়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। তবে একাডেমিক কাউন্সিলের নীতিমালা, ব্যাচেলর ডিগ্রী, মাস্টার্স ও পরিবহন নীতিমালা থাকলেও হয়নি পেনশন, ছুটিসহ অন্যান্য নীতিমালা। আর এগুলো সংবিধি-বিধি আকারে মঞ্জুরী কমিশন এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে নয়। সাবেক উপাচার্য স্বাক্ষরিত ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর নামেমাত্র একটি পরিবহন নীতিমালা হলেও তা পূর্ণাঙ্গ রুপ পায়নি এখনো। এদিকে শিক্ষার্থীদের আচরণ-শৃঙ্খলা নীতিমালা হলেও তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নেই। আর ছুটি ভোগের কোনো নীতিমালাই হয়নি আজও।
এ প্রসঙ্গে মার্কেটিং বিভাগের সহকারি অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক বলেন, ‘আমি কয়দিন ছুটি ভোগ করব, না করবো এ সংক্রান্ত কোনো ছুটির নীতিমালা হয়নি।’
কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সামসুল হক বলেন, সাবেক উপাচার্যের সময় সংবিধি-প্রবিধি তৈরির কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। তবে জানতে পেরেছি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও পেনশন নীতিমালা প্রণয়নের কমিটি হয়েছে। প্রত্যাশা করি নীতিমালাটি পূর্ণাঙ্গ রুপ পাবে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম রব্বানী এ উপাচার্যের যোগদানের পূর্বেই সংবিধি-প্রবিধি প্রণয়নে জোর প্রত্যাশা করেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যায়ের উন্নয়ন ও শিক্ষা সংক্রান্ত নীতিমালার বিষয়ে জানতে দ্বিতীয় ফায় রেজিস্ট্রারকে কল করলে জেনে জানানোর কথা বলে পরবর্তী সময়ে সাড়া নে নি।
সংবিধি-প্রবিধি প্রণয়নে উপাচার্যের পদক্ষেপ জানতে আজ বুধবার বিকালে তাঁর নিজস্ব মোবাইলে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নয় বছর হলেও সকল বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সংবিধি-প্রবিধি প্রণয়ন হোক-এটাই সকলের প্রত্যাশা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন