পঞ্চগড়ের করতোয়ায় নৌকা ডুবিতে শিশুসহ ২৪জনের মৃত্যু
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় এই প্রথম নৌকাডুবিতে শিশুসহ ২৪জনের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে উপজেলায় দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকার করতোয়া নদীতে নৌকা ডুবে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বোদা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজন কুমার রায় ২৪ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের ফুটকিবাড়ী এলাকার হেমন্ত কুমারের মেয়ে শ্যামলী রানী(১৪) একই গ্রামের বাসুদেবের স্ত্রী রুপালী ওরফে খুকি রানী(৩৫), উপজেলার বামনপাড়া এলাকার নির্মল চন্দ্র এর স্ত্রী সোভা রানী(২৭) একই গ্রামের সজীবের ছেলে পিয়ন্ত(২.৫), পাঁচপীর ইউনিয়নের বংশীধর গ্রামের শ্রী রমেশ চন্দ্র এর স্ত্রী সনিতা রানী(৬০), সাকোয়া ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের মন্টু চন্দ্র বর্মনের স্ত্রী ফাল্গুনী(৪৫) একই ইউনিয়নের জয়নন্দ বড়–য়া গ্রামের মহনীমহন এর স্ত্রী প্রমীলাদেবী(৭০), চন্দনবাড়ী ইউনিয়নের চন্দনবাড়ী এলাকার সত্যেন্দ্রনাথ এর ছেলে জোতিশ চন্দ্র(৫৫), বংশীধর পুজারী এলাকার চুরা মহন এর স্ত্রী সনেকা রানী(৬০), ময়দানদিঘী ইউনিয়নের ময়দানদিঘী এলাকার বিলাস চন্দ্র এর স্ত্রী সফলতা রানী(৪০), বড়শশী ইউনিয়নের কুমাড়পাড়া গ্রামের মৃত আহাম্মদ আলীর ছেলে হাশেম আলী(৭০), মাড়েয়া ইউনিয়নের কমলাপুকুরী গ্রামের শ্রী অভিরাম এর ছেলে বিলাস চন্দ্র(৪৫) একই ইউনিয়নের বামনহাট গ্রামের রমেশ চন্দ্র এর স্ত্রী শ্যামলী রানী ওরফে শিমুলী(৩৫) ও আলোকপাড়া গ্রামের রমেশ এর ছেলে উশোশী(৮), পাঁচপীর ইউনিয়নের মদনহার গ্রামের রতনের ছেলে শ্রেয়শী, দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাংগা ইউনিয়নের শালডাংগা এলাকার শ্রী কার্তিক এর স্ত্রী লক্ষী রানী(২৫), শালডাংগা ইউনিয়নের হাতিডোবা গ্রামের বাবুল চন্দ্র রায়ের ছেলে দীপঙ্কয়(৩) একই গ্রামের নারায়নের ছেলে তনুশ্রী(৫) এবং শালডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিডোবা ছত্রশিকারপুর গ্রামের নারায়নের ছেলে প্রিয়ন্তী(৮) ও রবিনের ছেলে বিষ্ণু(৩.৫). মধ্যশিকারপুর এলাকার কালিকান্ত এর ছেলে অমল চন্দ্র(৩৫), শালডাংগা ইউনিয়নের তেলীপাড়া গ্রামের শ্রী রবীর এর স্ত্রী তারা রানী(২৫) ও একই গ্রামের মৃত কলিন্দ্র নাথ এর স্ত্রী ধনবালা(৬০), ডাঙ্গাপাড়া এলাকার চন্ডী প্রসাদ এর স্ত্রী প্রমীলা রানী(৫৫)।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ শিশু, ৪ পুরুষ ও ১২ নারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর আটজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি ১৬ জনের লাশ তৎসময়ে নদীর পাড়ে রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নদীর অপরপাড়ে মহালয়া উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যয় বরদ্বেশ্বরী মন্দিরে এক বিশাল ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। মূলত এই ধর্মসভায় যোগ দিতে নিহতরা নৌকা যোগে অপরপাড়ে যাচ্ছিল। দুপুরের দিকে নদীর মাঝপথে অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেকে সাঁতার জানায় তীরে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে মারা যায়।
ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত সদস্যের প্রতিটি পরিবারকে লাশ সৎকারের জন্য আপাতত ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জয়শ্রী রানী রায়কে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, এ জেলার ইতিহাসে ভয়াবহ নৌকাডুবি এটি। এখন পর্যন্ত ২৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার কাজ চলমান রয়েছে। নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। আর আহতদের চিকিৎসা খরচ বহন করবে জেলা প্রশাসন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন