পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আপন চাচার পরিকল্পনায় ভাতিজা খুন
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আপন চাচার পরিকল্পনায় ভাতিজাকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরেকজন পলাতক রয়েছেন।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে জেলা পুলিশের নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার এএসএম সিরাজুল হুদা পিপিএম।
জানা যায়, গত বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের করতোয়া নদীর পাশে ধানশুকা এলাকার একটি চা বাগান থেকে কামরুল ইসলাম নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৪ঘন্টা না পেরুতেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ। যা গত ২৬ জানুয়ারি তেঁতুলিয়া মডেল থানার ১৭নং মামলায় হত্যাকারীকে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২৩ জানুয়ারি তিরনইহাট ইউনিয়নের যুগীগছ এলাকার কামরুল ইসলাম বাজার করতে শালবাহান হাটে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় বাড়িতে বাজার ও সাইকেল পাঠালেও তিনি ফেরেননি। বাড়িতে না ফেরায় পরিবার বিভিন্ন স্থানে খোঁজা-খুঁজি করে তাকে না পেয়ে গত ২৫ জানুয়ারি দুপুরে তার ছোট ভাই মোঃ কাবুল হাসান তেঁতুলিয়া থানায় হাজির হয়ে নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যার সাধারণ ডায়েরী নং ৯৮৭। জিডির পর থেকেই পুলিশ তদন্তে নামে। সাধারণ ডায়েরী করার চার ঘন্টার মধ্যেই প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তেঁতুলিয়া থানা পুলিশ ওই উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের একটি চা বাগানের ড্রেন হতে কামরুলকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে ফেলে যাওয়া আলামত এর সূত্র ধরে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এস.এম সিরাজুল হুদা পিপিএম এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) কনক কুমার দাসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ রাকিবুল ইসলামের সার্বিক সহযোগীতায় তেঁতুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে হত্যার অভিযোগে প্রথমে দিদার ও পরে সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদেরকে রিমান্ডে আনা হলে ঘটনাটি জমি-সংক্রান্ত বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। ঘটনার মূল পরিকল্পনা করেন কামরুলের আপন চাচা সাইফুল ইসলাম। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরেকজন নজিবুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ সুপার এএসএম সিরাজুল হুদা পিপিএম বলেন, নিহত কামরুল ইসলাম কামুর সঙ্গে চাচা সাইফুলের জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধের জের ধরে চাচা সাইফুল কামরুলকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন। সে পরিকল্পনায় হত্যাকারী দিদার ও নজিবুল ইসলাম গত ২৩ জানুয়ারি কামরুলকে মেরে চা বাগানে ফেলে রাখেন। এ ঘটনায় প্রথমে আমরা দিদারকে গ্রেপ্তার করি। পরে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলে তার তথ্য অনুযায়ী রোববার (২৯ জানুয়ারি) হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী সাইফুল ইসলামকে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর এক সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করি। এ ঘটনায় মোট তিনজন জড়িত। এদের মধ্যে পলাতক নজিবুল ইসলামকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে।
এসময় প্রেস ব্রিফিং-এ উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এসএম শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অ্যাপস) কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রাকিবুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন