পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চুরি করতে ডেকে নিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চুরি করার জন্য বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় নজমুল এতে মারা যায় আব্দুর রহিম (৩০) নামের এক ব্যক্তি।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের দাফাদারপাড়া গ্রামে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। আব্দুর রহিম ওই গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে। অন্যদিকে চুরি করতে নিয়ে যাওয়া চোরের গডফাদার নজমুল একই গ্রামের মৃত গোমির উদ্দিনের ছেলে।
মৃত রহিমের স্ত্রী সুরমা জানায়, বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে আমার স্বামীকে পাশের বাড়ির কমলা (নজমুলের মেয়ে) ডাকতে আসলে, তাদের বাড়িতে যায়, একটু পরে বাড়িতে এসে কাপড়-চোপড় নিয়ে বের হলে তাকে বলি তুমি কোথায় যাবা, সে বলে সাইফুলের বাপের (নজমুলের) সঙ্গে রংপুর দিনাজপুরে যাবো।
সেই যাওয়ায় কাল হলো তার জন্য। “চুরি করতে ডেকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলেছে আমার স্বামীকে” দুই চোখে অশ্রু ভেজা জল আর আড়াই বছরের ইশাকে নিয়ে গর্ভধারীনি সুরমা আক্তার এসব কথা জানিয়েছেন।
জানতে পারা যায়, শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) ঠাকুরগাঁও জেলা সদরের বাংলাদেশ বেতারের সামনে সালন্দর এলাকার ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কের উপর এলাকার লোকজন রাত ১টার দিক আব্দুর রহিমকে পড়ে থাকতে দেখে জরুরি কল ৩৩৩ লাইনে ফোন করলে ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশ গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত রহিম খুবই ভালো ছেলে ছিল। কয়েক বছর হলো বিয়ে করেছে। সে আগে দোকানে কাজ করতো। পরে ট্রাক ও ট্রলিতে পাথর লোড-আনলোডের কাজ করতো। হঠাৎ তাকে নজমুল চোর চুরি করার জন্য নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। এলাকাবসি আরও বলেন, নজমুল এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে। তার অত্যাচারে এলাকায় বসবাস করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় এলাকাবাসি নজমুল ও তার ছেলে সাইফুলকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে পুলিশ প্রশাসনসহ আদালতকে দৃষ্টি আকর্ষণ জানিয়েছেন।
এদিকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন রহিমের মা জাহেদা বেগম তিনি বলেন, ওই দিন সে তার মেয়ের বাড়িতে যান। মেয়ের বাড়ি থেকে জানতে পারে তার ছেলে আর বেঁচে নেই। জাহেদা বাড়িতে এসে জানেন নজমুল তার ছেলেকে চুরি করার জন্য নিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, আমার ছেলেকে নজমুলই মারছে।
এ বিষয়ে দেবনগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ছলেমান আলী বলেন, নজমুল চোর রহিমকে চুরি করতে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। রহিমের মৃত লাশ এখনো ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে রয়েছে। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানতে পেরেছি।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জরুরি কল ৩৩৩ লাইনে ফোন করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রহিমকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রহিমের মৃত্যু হয়। তাকে গুরুত্বর আহত করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) ময়নাতদন্তের পর বুঝা যেতে পারে কিভাবে তাকে মারা হয়েছে এবং কে বা কাহারা তাকে মেরেছে।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, তিনি বিষয়টি অবগত আছেন। রহিমের লাশ ঠাকুরগাঁও সদর থানার আওতায় ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন


















