পটুয়াখালী-৪ আসনে আ.লীগে একাধিক প্রার্থী, বিনয়ী মহিবেই মুগ্ধ সাধারণ জনতা
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্তিত্বের জানান দিতে দক্ষিণে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। ফলে দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সরব হয়ে উঠছে রাজনৈতিক মাঠ।
তবে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামীলীগে একাধিক প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জনে এখন সাধারণের মাঝে চলছে হিসাব নিকাশ। পিছিয়ে নেই বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে পোষণকারী ব্যক্তিরাও। তবে সরকার পতন চেয়ে চলমান আন্দোলনে বিএনপির নেতারা ব্যস্ত সময় পার করলেও মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। আর একাধিক রাজনৈতিক সংগঠন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও আওয়ামীলীগ ও বিএনপির প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়েই জনমনে রয়েছে প্রশ্ন এবং কৌতুহল। ফলে উপকূল জুড়ে বইতে শুরু করেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া। তবে এই জনপদে আওয়ামীলীগ থেকে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও সাধারণ মানুষের কাছে বিনয়ী স্বভাবে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন বর্তমান এমপি মো. মহিব্বুর রহমান মুহিব।
যা নির্বাচনের আগ মুহূর্তে চায়ের দোকানসহ জনসাধারণের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। সাধারণ এসব মানুষ বলছেন, আওয়ামীলীগ থেকে বর্তমান এমপিসহ সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহাবুবুুর রহমান, তার ভাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা শামিম—আল সাইফুল সোহাগ, সাবেক এমপি পুত্র আবদুল্লাহ আল ইসলাম লিটন মনোনয়ন চাইছেন এই আসনে।
এছাড়াও এই দলের একাধিক প্রার্থী থাকলেও তাদের নিয়ে হিসাব কষছেন না সাধরণ ভোটাররা। তবে বর্তমান এমপির গত ৫ বছরের শান্ত স্বভাবের কর্মকান্ডে মুগ্ধ সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, জীবন বাজি রেখে কখনো করোনাকালে, আবার কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে পৌঁছেছেন অসহায় মানুষের দুয়ারে। মৃত্যুকে পরোয়া না করে ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যেও ছুটে বেড়িয়েছেন বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। আর সাধারণ মানুষের সঙ্গে হিংসা বিদ্বেষহীন নমণীয় আচরণ তার নিত্যদিনের পেশা। আর বিণয়ী স্বভাবের হাস্যোজ্জ্যল মানুষটি সন্ত্রাস দমনে দক্ষিণে কঠোর ভূমিকা পালনে জায়গা করে নিয়েছেন সব শ্রেনীর ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের অন্তরে। তারা বলছেন, মহিব্বুর রহমান এমপি হওয়ার পর এই আসনটি থেকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সম্পূর্ণ রূপে নিমূর্ল হয়েছে। কিন্তু এই এমপি গত জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েও নানান ষড়যন্ত্র ও চরাই উৎরাইয়ের মধ্যেদিয়ে কাটিয়েছেন তার প্রায় মেয়াদকাল।
এসব মানুষের দাবী, সারাদেশের মধ্যে বর্তমানে দক্ষিণ উপকূলের এই জনপদ দৃষ্টান্ত উদহারণ মাত্র। কারণ হিসেবে শান্তিপ্রিয় মানুষ বলছেন, এ যাবৎকালে গত ৫ বছরে কলাপাড়া—রাঙ্গাবালী, মহিপুর এবং কুয়াকাটায় সন্ত্রাস দেখেননি সাধারণ মানুষ। এছাড়া সালিশ বানিজ্য, আধিপত্য বিস্তার করে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন হয়নি একটাও, দলীয় নেতাকর্মীদের উপর হামলা নির্যাতন, ভুমি দখল, বিভিন্ন দপ্তরসহ ভুমি অফিসে দালালী, থানার দালালীর কবলে পড়তে হয়নি জনসাধারণকে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মাদক নির্মূল এবং একজন এমপির নিজস্ব কোন বাহিনী নেই এমন ঘটনা হয়তো কেবল এই এমপিই উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।
পৌর—শহরের ওষূধ বিক্রেতা রাসেল জানান, আমার বনাজী ওষুধের দোকান থেকে আগে সপ্তাহে কিছু টাকা নিতো এক শ্রেনীর মানুষ। কিন্তু বর্তমান এমপি সাহেব আসার পর আর কেউ টাকা চায়নি। এছাড়া এমপি সাহেব আমার খোঁজ রাখেন কেউ চাঁদা নেয় কিনা।
কথা হলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান আজাদ জানান, দীর্ঘ একদশক পরে গত নির্বাচনে মহিব্বুর রহমান এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এই এলাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে মানুষ। কোথাও কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছিল না, সালিশ বানিজ্য ছিল না, গ্রুপিং করে দলীয় কোন নেতাকর্মীর মধ্যে হামলার ঘটনাও ঘটেনি। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর আমি ব্যক্তিগতভাবে তার কাছে একদিনও যাইনি। কিন্তু তার কর্মকান্ডে শতকরা ৭০ ভাগ মানুষই খুশি, তাই আমিও খুশি।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সম্পাদকের আপন ভাইয়ের ছেলে সালাউদ্দিন বলেন, আমরা আওয়ামী পরিবারে জন্ম নিয়েছি। কলাপাড়া পৌর শহরের সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের পাশেই আমার বাসা এবং বেড়ে ওঠা। বিগত দিনে এই সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের সামনে লাইনে চাঁদাবাজী এবং নেতাদের ভিড় দেখতাম। তারা সাধারণ মানুষের থেকে দলিল হলে টাকা ছিনিয়ে নিত। কিন্তু মহিব সাহেব এমপি হওয়ার পর এইখানে ৫ বছরে কাউকে দেখিনি। তিনি বলেন, যদিও এমপি সাহেব হয়তো আমাকে চেনেন না এবং আমারও তার কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু কলাপাড়াতে তিনি যে শান্ত পরিবেশ বজায় রেখেছেন এজন্য তৃপ্তি পাচ্ছি।
কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম জানান, সাংসদ মহিব্বুর রহমান একজন দানশীল এবং বিণয়ী স্বভাবের মানুষ। তিনি বলেন, বিগত দিনে কলাপাড়ায় শতাধিক দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মীরা হামলার স্বীকার হয়েছেন, অনেকের হাত পায়ের রগ কর্তন করা হয়েছে। অনেক কর্মীর জমি দখল হয়েছে। কিন্তু এই এমপির আমলে কোন দলীয় কর্মীরা শাররিক লাঞ্ছিত হয়নি, কোন কোরাম নেই, সন্ত্রাস নেই। ব্যবসায়ীরা শান্তিতে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো এই জনপদের মানুষ খুব শান্তিতে আছে, নিরাপদে আছে।
আওয়ার নিউজ বিডির প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে, পটুয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মহিব্বুর রহমান বলেন, আমার ব্যক্তিগত কোন চাওয়া-পাওয়া নেই, এমনকি পদ-পদবীর কোন চাহিদাও নেই। শুধু বলবো, বঙ্গবন্ধুর কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাবো কি পাবো না তা নিয়ে ভাবছি না। এখন আমার নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে যা যা করার প্রয়োজন তাই করার চেষ্টা করছি। তবে সন্ত্রাস দমন, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, সালিশ বানিজ্যসহ বিভিন্ন দালালী বন্ধের লক্ষ্যে সাধারণ মানুষকে যে ওয়াদা আমি দিয়েছিলাম তা রাখার চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, আমি শুধু নেত্রীর আদেশ এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ পালন করেছি। তাতে অনেকের অনৈতিক প্রস্তাব আমি রাখতে পারিনি। ফলে একটি মহল আমাকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ষড়যন্ত্র করেছে, মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছে তাতে আমি বিচলিত নই। কারণ তাদের মিথ্যাচার মানুষ বুঝে নিয়েছেন। আর আল্লাহ আমাকে পারিবারিকভাবে অনেক সম্পদ দিয়েছেন। আমৃত্যু নিজের পরিবার নিয়ে বসবাসের পরেও মানুষের সেবা করতে পারবো, সহায়তা করতে পারবো। দলের জন্য এমপি হওয়ার আগেও বিনিময় ছাড়া আপ্রান চেষ্টা করেছি। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন করে যাবো ইনশাআল্লাহ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন