পটুয়াখালীর মহিপুরে সরকারি সম্পত্তি ও নদী দখলের মহোৎসব
ভূমি বন্দোবস্তের নামে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ কেটে নদীর চর দখল, কারো তোয়াক্কা না করে সরকারী খাস জমিতে বহুতল ভবন নির্মান, ঐতিহ্যবাহী খাস পুকুরে পাকা স্থাপনা নির্মান, প্রবাহমান নদীতে অবাধে প্রাচীর তুলে জমি বিক্রি। দীর্ঘদিন ধরে এমন কার্যক্রম অব্যহত থাকলেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ রয়েছে উদাসীনতার ভূমিকায়।
সচেতন মহলের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এক অসাধু কর্তার যোগসাজোশেই বন্ধ হচ্ছে না সরকারী সম্পত্তি ও নদী দখলের মহোৎসব।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পটুয়াখালীর মহিপুর সদর ইউপির নজীবপুর ৫নং ওয়ার্ডে জমি বন্দবস্তের নামে বিশাল এলাকাজুড়ে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে একাধিক স্থাপনা নির্মান কাজ অব্যহত রয়েছে। পাশাপাশি বিশালাকৃতির শত শত ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ কেটে শিববাড়িয়া নদীর চড়ে মাটি কেটে একের পর এক বাঁধ নির্মান করে দখল করা হচ্ছে। এসব দখলদার ভূমিখেকোদের দাবী সরকারী বন্দোবস্ত পেয়েই তারা ঘরবাড়ি নির্মান করছেন। তবে কোনো ধরণের সীমানা নির্ধারণ না করেই কেনো দখল করা হচ্ছে জানতে চাইলে কোনো সদোত্তোর মেলেনি।
এদিকে পানিউন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ঐতিহ্যবাহী পুকুর দখল করে নির্মান করা হচ্ছে পাকা স্থাপনা। দখলদার ব্যক্তিদের দাবী সংশ্লিষ্ট অফিসে বন্দোবস্ত পাওয়ার আবেদন করেই পাকা বসত ঘর নির্মান করছেন তারা।
অপরদিকে বিপিনপুর কলবাড়ি এলাকায় শিববাড়িয়া নদীর মধ্যেই প্রাচীর তুলে চলছে দখল সন্ত্রাস। কোনো ধরনের নিয়মের তোয়াক্কা না করেই দৃষ্টিকটু এমন দখলদারীত্বে ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীদের।
অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট দেয়াল তুলে নদী দখল করে বিক্রি করে দিয়েছে কলাপাড়ার এক প্রভাবশালী নেতার কাছে।
জানতে চাইলে ওই প্রভাবশালী ব্যাক্তি জানান, দেয়াল আমি নির্মান করিনি, নদীর মধ্যে ওই দেয়াল মানুষের চোখে দৃষ্টিকটু হলে আমি ভেঙ্গে ফেলবো।
তবে দেয়াল তুলতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাধা প্রদান করেছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানা নেই।
এছাড়া মহিপুর বাজারের বিভিন্ন স্থানে তোলা হচ্ছে ভবনসহ একাধিক পাকা স্থাপনা। তাদের অনেকেরই চান্দিনা ভিটির বন্দবস্ত থাকলেও সরকারী নিয়ম উপেক্ষা করে মহিপুর তসিল অফিস ম্যানেজ করেই দীর্ঘদিন যাবৎ চলছে নির্মাণ কার্যক্রম। এমন অভিযোগ নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসীন্দাদের।
দখল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে না কেনো এবং দায়িত্ব কার, জানতে চাইলে মহিপুর ইউনিয় ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, আমি নজীবপুরের ব্যাপারে আমার উপোরস্থ কর্মকর্তাদের জানিয়েছি, তারা পদক্ষেপ না নিলে আমি কি করবো।
এছাড়া বাজারের মধ্যে যেসকল ভিটিতে স্থাপনা নির্মান করা হচ্ছে তারা ডিসিআর নিয়ে নির্মান করছেন। তিনি কোনো ম্যানেজের মধ্যে নেই। কেউ অভিযোগ করলে তা ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তবে পাকা ভবন নির্মানের ব্যাপারে তিনি কোনো সদোত্তোর দিতে পারেননি।
এদিকে কলাপাড়া পানিউন্নয়ন বোর্ড’র (পাউবো) মহিপুর শাখা কর্মকর্তা মো. তারিকুর রহমান তুহিন জানান, যারাই পুকুর দখল করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে তালিকা করে পাঠানো হয়েছে।
কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল জানান, সব বিষয়গুলো দেখা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন