পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কাঁচা-লাল মরিচ মাঠজুড়ে, তবে চাষিরা হতাশ দামে

গত কয়েক বছর ধরে বাজারে মরিচের ভালো দাম থাকায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সমুদ্র উপকূলে এবছর ব্যপক মরিচের আবাদ করেছেন চাষিরা। গাঁ ঝলসানো রোদে কৃষান কৃষানিদের নিয়মিত পরিচর্যা আর ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রমে ফলোনও খুব ভালো হয়েছে। তবে করোনার প্রভাবে পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় উৎপাদিত মরিচ বাজারজাত করতে না পারায় লোকসানের মুখে পরেছেন চাষিরা।
সারাবছরই মৌসুমের এ সময়টাতে ভালো দাম হাকানো আগাম চাষিরাও বলছেন মরিচের দাম অনেকটাই পড়তির দিকে। ফলে অনেক চাষি পরিপক্ক মরিচ বাজারজাত করতে না পারায় এখন ক্ষেতজুড়ে চোখ ঝাজানো পাকা মরিচের লাল রং চোখে পড়ার মতো।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন মরিচ উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষান কৃষানিরা। অনেকেই আবার বাড়ির আঙ্গিনায় রোদে শুকাচ্ছেন পরিশ্রমের দাম না পাওয়া উৎপাদিত ফসল। আর এসব কাজে ভাগ্য বদলের চেষ্টায় ক্ষেত থেকে মরিচ তোলাসহ পুরুষের পাশাপাশি বেশি শ্রম দিচ্ছেন নারী শ্রমিকরা।
উৎপাদন কারীদের ভাষ্যমতে, ক্ষেত থেকে মরিচ তোলার কাজে সহায়তাকারী শ্রমিকদের উৎপাদনের ৬ ভাগের ১ ভাগ দিতে হয় শ্রমের বিনিময়ে, পানি সেচ, সার, ঔষধ, পরিচর্যাবাবদ খরচ করতে হয়েছে অনেক। বর্তমানে মরিচের বাজার মূল্য নিন্মমুখি হওয়ায় সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ উশুল নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ’র তথ্যমতে, এ বছর ৫’শ ৪০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ করেছেন কৃষকরা।
প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে প্রায় ৪ টন মরিচ উৎপাদন হয়েছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলার লতাচাপলী, ধুলাসার, নীলগঞ্জ, চম্পাপুর, বালিয়াতলীসহ বেশকয়েকটি ইউনিয়নে মরিচ চাষে ভালো উৎপাদন এবছর লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
বিভিন্ন জাতের মধ্যে বিন্দু, জিরা, বাঁশগাড়াসহ আরো বেশ কয়েকটি জাতের মরিচের বাম্পার ফলোন হয়েছে।
নীলগঞ্জ ইউপির নাওভাঙ্গা গ্রামের মরিচ চাষি তাইয়্যেব বলেন, দাম ভালো পাওয়ায় এবছর বেশি জায়গায় মরিচ আবাদ করেছেন তিনি। তবে ফলন ভালো হলেও কাচামরিচে দামে পর্তায় আসেনী। এছাড়া গত বছর মন প্রতি শুকনা মরিচের দাম ৮ হাজার থেকে ৫ হাজরে নেমে এসেছে বলে অনেকটাই হতাশাগ্রস্থ তিনি।
লতাচাপলি ইউপির তাজেপাড়া গ্রামের কৃষক ইউনুচ হাচান জানান, এবারে তিনি প্রায় ৩ একর জমিতে মরিচ চাষ করে ভালো ফলোন পেয়েছেন। তবে মন প্রতি দাম অনেক কম থাকায় তিনি কাচা মরিচ বিক্রি করেননি। এখন পাকা মরিচ নিয়ে চিন্তায় পরেছেন।
একই কথা জানান, মরিচ চাষি মো.হাফিজুর রহমান ও মধু মিয়া। তাদের ভাষ্যমতে করোনার কারনেই মরিচের দরপতন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি-কর্মকর্তা আবদুল মন্নান জানান, এ বছর উপজেলায় লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে ৫০০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ৪ টন উৎপাদন হয়েছে। আগামীতে আবাদ ধরে রাখতে হলে কৃষকদের ন্যায্য দাম না দিলে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের মাঠ পর্যায়ে অভিযোগ পেলে প্রনোদনার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।


এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন




















