পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় লিজ নেয়া জমিতে সবজীচাষ, বছরে আয় কয়েক লক্ষ টাকা
গরীব কৃষক পরিবারে জন্ম হওয়ায় লেখা পড়া তেমন একটা করতে পারেননি তিনি, অভাবের সংসারে বাবার সহযোগীতার হাত বাড়াতে ছোট বেলা থেকেই কৃষিতে মনযোগী হন।
তবে নিজের জমি না থাকায় রোদে পুড়ে দীর্ঘ একযুগ কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। পড়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন প্রভৃতি সবজী চাষ। আর লিজ নেয়া অন্যের সেই জমিতেই সোনা ফলিয়ে বাজিমাত করছেন তিনি। যার এখন বছরে আয় কয়েক লাখ টাকা।
কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির মজিদপুর গ্রামের মৃত কাজেম আলীর পুত্র একজন সফল কৃষক মো. কালাম হাওলাদার। যিনি নিজ এলাকাতেই ফসলী মাঠে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে। শত কষ্ট এবং ঝড় বৃষ্টিতে ভয় না করে অন্যের তিন একর ভাড়াটে জমিতে গড়ে তুলেছেন হরেক রকম সবজির ক্ষেত। এর মধ্যে এবছর উচ্চমূল্যের সবজি চাষে বাজিমাত করেছেন তিনি।
ইতোমধ্যে সম্প্রতি মৌসুমে ব্রকলি, চাইনিজ ক্যাবেজ, লেটুস,রাখাইন বেগুন, বাধা কপি, ফুল কপি, ওলকপি, পালন শাক, ভাটি শাক ও টমেটোসহ প্রভৃতি জাতের ফসল উৎপান করে তা বাজারজাত করেছেন। তবে উচ্চমূল্যের সবজি চাইনিজ ক্যাবেজ,লেটুস এবং বিভিন্ন জাতে ফুলকপি বিক্রিতে কৃষি বিভাগকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই খামারি। কৃষক কালাম জানান, ১ বছর মেয়াদী জমি লিজ নিয়ে প্রায় তিন একর জমিতে সবজি চাষ করেছেন এই মৌসুমে। নিজের ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রমের পাশাপাশি চারজন বদলা নিয়ে ক্ষেতের পরিচর্যা করেছেন। তবে দুই লক্ষাধিক টাকা উৎপাদন খরচ হলেও ইতোমধ্যেই প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। এছাড়া ক্ষেতে বিক্রিযোগ্য এখনও প্রায় আড়াই লাখ টাকার ফসল রয়েছে। কিন্তু শেষ সময়ে সবজির দাম পড়তির দিকে থাকে। তাই আগামী রমজান মাসকে সামনে রেখে নতুন করে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে বীজ এবং চারা রোপনে ক্ষেত প্রস্তুত করছেন।
তিনি বলেন, জীবনে অনেক কষ্ট করলেও এখন তিনি এই সবজি চাষ করেই ভাগ্য বদল করেছেন। এছাড়া সবজি বিক্রির টাকা দিয়ে ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা লাভের পাশাপাশি ধান চাষের জন্য দুই বিঘা জমিও কিনেছেন । আর ভবিষ্যতে আরো বড় পরিকল্পনা রয়েছে তার। কৃষক কালামের ক্ষেত কামলা ছিদ্দিক জানান, দৈনিক ৬শ’ টাকা বদলায় কালামের ক্ষেতে কাজ করেছেন তিনিসহ মোট চারজন। তিনি বলেন, কালামের ক্ষেত আরো বড় হলে ওই খামারে বেশি দিন বদলারা কাজের সুযোগ পাবে। তার সরকারী সহায়তা প্রয়োজন।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আরএম সাইফুল্লাহ জানান, কৃষক কালাম একজন সফল উদ্যোক্তা। তার নিজের জমি না থাকলেও অন্যের জমি লিজ নিয়ে সবজি চাষে তাক লাগিয়েছেন। তবে তাকে কৃষি বিভাগ থেকে বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক, নেট, ঝাজড়ি, ফসল বিক্রির কাজে ব্যবহৃত ক্যারেট, সেচ দেয়ার জন্য পাম্প দেয়া হয়েছে।
এছাড়া তার ক্ষেতে উৎপাদিত উচ্চমূল্যের লেটুস বিক্রিতে ফরেনারদের সাথে যোগাযোগ করে দেয়া হয়েছে। তার সকল সহযোগীতার লক্ষে কৃষি বিভাগ সচেষ্ট রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন