পদত্যাগ করেও তারা আছেন ‘দায়িত্বে’
বিধান অনুযায়ী কোনো মন্ত্রী তার পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর তা যদি প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেন, তাহলে উক্ত পদে আর সেই মন্ত্রী থাকতে পারেন না।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশর পর টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রী মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেন।
তারা হলেন, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, প্রবাসীকল্যাণ ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়কমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
তবে বুধবারও তারা স্বপদে রয়ে গেছেন। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, তাদের পদত্যাগপত্র এখনো প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেননি।
এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের (টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী) প্রধানমন্ত্রী কাজ করতে নিষেধ করেননি। উনি আমাদের কাজ করতে আবার বলবেন কেন? উনি যথারীতি আমাদের যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেটা আমরা পালন করেছি। উনি যদি এটা (পদত্যাগপত্র) গ্রহণ করেন, তাহলে আমরা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করব না।’
তিনি বলেন, ‘পদত্যাগপত্র জমা দেয়া মানে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া নয়। এটার একটা প্রক্রিয়া আছে। এই প্রক্রিয়া শেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেলেই দায়িত্ব ছেড়ে দেব।’
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র সহকারী একান্ত সচিব ইয়াসির মো. আদনান বলেন, ‘পদত্যাগপত্র দেয়া মানেই দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া নয়। এটা প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত স্যার মন্ত্রী আছেন। প্রজ্ঞাপন না হলে তিনি দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবেন।’
এদিকে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, মন্ত্রীর ছবি ও তার পদবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সেখানে শুধুমাত্র সচিবের ছবি দেয়া আছে।
বাকি মন্ত্রণালয়গুলোর ওয়েবসাইটে যথারীতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর ছবি রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ব্রিফিং করে বলেন, ‘মন্ত্রিসভার মঙ্গলবারের বৈঠকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
এরপর সন্ধ্যায় চার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন।
অধ্যক্ষ মতিউর রহমান সরকারের শুরু থেকেই এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাজোট সরকারে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি।
নুরুল ইসলাম বিএসসি ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর তাকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।
মোস্তাফা জব্বার ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর তিনি ৩ জানুয়ারি তাকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।
আর স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তৎকালীন বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি দ্বিতীয় মেয়াদেও একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। আর ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই তাকে ওই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন