পাঁচটি মাদকপণ্য সেবন করতো ঐশী
বাবা-মায়ের হত্যার দায়ে তাদের কন্যা হাইকোর্টে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমান শিশা, গ্যালোজ, ইয়াবা, হুইস্কি ও গাজা সেবন করতো বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায় ঘোষণাকালে এসব মন্তব্য করেন। রায়ে ঐশী রহমানকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।
আদালত তার রায়ে বলেন, ১৮ বছর হওয়ার আগে থেকেই ঐশী মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে পড়ে। বাবা সরকারি চাকুরী আর মা বেসরকারী চাকুরী করার কারণে ছোটবেলা থেকেই ঐশী বাবা-মায়ের আদর-যত্ম হতে বঞ্চিত হয়। বাবা-মা এবং শিক্ষকের ভূমিকা ছোটবেলা থেকেই প্রতিটি শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
রায় ঘোষণার সময় আদালত আরো বলেন, আমরা এই মামলার রায় ঘোষণার পূর্বে পাঁচটি বিষয় বিবেচনায় নিয়েছি। তা হলো-
এক. ঐশী বংশগতভাবে তার নানী ও মামার মতো অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত ছিলো।
দুই. ঐশীর বয়স (বর্তমান বয়স ১৯) কম। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মায়ের আদর-যত্নের অভাবে ঐশী মানসিক বিকারগ্রস্থ ছিলো।
তিন. ঐশী মাদকাসক্ত ছিলো।
চার. হত্যার দুইদিন পরেই ঐশী আত্মসমর্পন করে।
পাঁচ. ঐশীর পরিবার-পরিজনদের মধ্যে কারো ক্রিমিনাল ব্যাকগ্রাউন্ড নেই।
এই পাঁচটি বৈষয়িক বিষয় বিবেচনা করে তার সাজা কমানো হয়েছে।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির। তাকে সহযোগিতা করেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও নিজামুল হক নিজাম।
অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজ বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (রাজনৈতিক শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মা-বাবা খুন হওয়ার পর পালিয়ে যান ঐশী। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
১৭ আগস্ট ঐশী রহমান রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। এরপর ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন ঐশী।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. আবুল খায়ের মাতুব্বর আসামিদের বিরুদ্ধে দুটি পৃর্থক অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কিশোর আইনে এবং ঐশীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অরেকটি চার্জশিট দাখিল করেন। সুমির মামলার বিচার কার্যক্রম কিশোর আদালতে পরিচালনা হচ্ছে।
২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধান আসামি ঐশী রহমানকে ডাবল মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন আদালত। অপর দুই আসামি ঐশীর বন্ধু রনিকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও জনিকে খালাস দেওয়া হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন