পাকিস্তানের যে শহরে হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই
কট্টর ইসলামপন্থী দেশ হিসেবে পরিচিত পাকিস্তান। এই দেশটির জন্মই মূলত মুসলিম জাতীয়তাবাদের হাত ধরে। তাইতো এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম হলো ইসলাম। শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষ মুসলিম হওয়ায় এখানকার সংস্কৃতিও ইসলামভাবাপন্ন। কিন্তু এই দেশটির এমন একটি এলাকা আছে যেখানে, যেখানে হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই।
ওই অঞ্চলটি হলো পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের মিঠি জেলা। করাচি থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে এই শহরের অবস্থান। প্রায় ৬০ হাজার হিন্দু বাসিন্দার এই জেলাটি সুফি ইসলামের প্রধান কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত। এখানকার হিন্দু মুসলিমরা নিজেদের ভ্রাতৃত্ববোধের মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রীতির বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। অনেকদিন থেকে তারা একে অন্যের ধর্মীয় উৎসবে অংশ নেন।
আশুরার মতো দিনেও এই শহরের অনুষ্ঠানে হিন্দু মুসলিম সকলে মিলেই একটি ঘোড়া সাজান। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রিয় দৌহিত্র ঈমাম হোসাইনের ঘোড়া জুলজানার আদলে সাজানো হয় সেটিকে। এছাড়াও মুকেশ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই মুহাররমের এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন।
স্থানীয় হিন্দুরা বলছেন, ঈমাম হোসেনকে আমরা ভালবাসি। তার প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। শুধু মুসলিমদের জন্য নয় ঈমাম হোসেন সবার জন্য মানবতা ও ভালোবাসার বার্তা নিয়ে এসেছিলেন ।
এই দিনে হিন্দুরাও শোক প্রকাশের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে খাবার এবং পানীয় বিতরণ করেন। মুহাররমের ১০ তারিখে সবচেয়ে বড় যে মিছিলটি বের হয় সেখানে হিন্দু মুসলিম উভয়ই অংশ নেন। এছাড়া মুসলিমরাও হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসবে অংশ নেয়।
৩৫ বছরের ব্যবসায়ী সুনীল কুমার বলেন, মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে তিনি বেড়ে উঠেছেন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে এই মৈত্রী ও ভালোবাসার ধারাবাহিকতার ফসল এই সম্পর্ক।
পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশনের (এইচআরসিপি) কর্মকর্তা মারভি সারমেড বলেন, পাকিস্তানে হিন্দুদের সাধারণত সন্দেহের চোখে দেখা হয়। হিন্দুরা এখানে নিজেদের নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে থাকে। কিন্তু মিঠির পরিস্থিতি অন্য রকম।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন