পানামায় মানবেতর দিন কাটছে বহু বাংলাদেশি শরণার্থীর
ভাগ্যান্বেষীদের কাছে অন্যতম গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে যত অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করে তার প্রায় শতভাগই মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে। এ পথে পা বাড়ান অনেক বাংলাদেশিও। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের আগে, কয়েকটি দেশ হয়ে মেক্সিকোতে পৌঁছান বাংলাদেশিরা। সেখানে পৌঁছাতে কখনো কখনো ১০ থেকে ১২টি দেশের সীমান্ত পাড়ি দিতে হয়। লিবিয়ার পাশাপাশি মানবপাচারের অন্যতম রুট হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো। তেমনই দালালদের খপ্পরে পড়ে অবৈধপথে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া চেষ্টায় পানামার শরণার্থী কেন্দ্রে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছেন অনেক বাংলাদেশি।
দুর্গম জঙ্গলের এ তাবুগুলো শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র। যারা উন্নত জীবনের আশায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য বেছে নিয়েছেন ভয়ঙ্কর এক পথ। দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম এ জঙ্গলে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের বেশিরভাগই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিক হলেও এখানে ঠাই হয়েছে অনেক বাংলাদেশির। যারা দালালদের খপ্পরে পড়ে অবৈধপথে মানব পাচারের শিকার হয়েছেন। এই কাতারে আছে, ভারত ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকও।
একজন বলেন, ‘আমি দুই মাস হলো এখানে এসেছি। আমার সন্তান খুবই অসুস্থ। এই পথটা খুবই বিপদজনক। প্রতিদিনই মানুষ মারা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, কোলের শিশুটাকে বাচাতে পারবো না।’
আরো একজন বলেন, ‘এ জঙ্গল অত্যন্ত বিপদজনক। ব্রাজিলের জঙ্গলের পরই এটা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। এই পথে পাড়ি দেয়া খুব কঠিন একটা কাজ। যেটা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। যারা এদের এই পথে এনেছে আমি বলবো, তারা চরম ভুল করেছে। নিরাপত্তা বাহিনী।’
মানবপাচারকরীরা প্রথমে আকাশ পথে দক্ষিণ আমেরিকার কোনো একটি দেশে নিয়ে যান। এরপর পানামা, কোস্টারিক, নিকারাগুয়া, হন্ডুরাস, গুয়াতেমালা হয়ে মেক্সিকোতে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে সুযোগ বুঝে সীমানা অতিক্রম করে স্বপ্নের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে দেয়া হয় তাদের। পাচারকারীরা সাধারণত জনবহুল এলাকা এড়িয়ে পাহাড় কিংবা জঙ্গলের পথকে বেছে নয়। এ দুর্গম পথ পাড়ি দিতে গিয়ে মারা যান অনেকেই।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মেক্সিকোর জেলে বন্দি রয়েছেন অনেক বাংলাদেশি। এরমধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৪শ’ ও ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আটক হন ৬শ’ বাংলাদেশি।
মেক্সিকোর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মাইগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মেক্সিকো সীমান্তে আটক হয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি বাংলাদেশি। তবে তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা যায়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন