পাবনায় আলোকিত পথের সন্ধানে এসএসসি ৯৩ “বন্ধু মিলন মেলা” অনুষ্ঠিত
পাবনা জেলা এসএসসি-৯৩ ব্যাচ কর্তৃক আয়োজিত সারা বাংলাদেশ থেকে আসা ৯৩ বন্ধুদের নিয়ে এক “বন্ধু মিলন মেলা” অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো পাবনা এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের আব্দুস সাত্তার মিলনায়তনে।
শুক্রবার সুর্যদয়ের সাথে সাথে শুরু হয় বন্ধুদের মাঝে টি-শার্ট, বাঙ্গালীর লাল রংয়ের গামছা, আইডি কার্ড, সকালের নাস্তাসহ বিভিন্ন গিফট সামগ্রী। শুরু হয় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বন্ধুদের সাথে পরিচিত পর্ব, জুম্মার নামাজের বিরতির পর দেয়া হয় দুপুরের খাবার। খাবার শেষে শুরু হয় মুল অনুষ্ঠান। যা থাকে বন্ধু আড্ডা, মঞ্চ মাতানো মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
চলতে থাকে বিকেলের নাস্তা চিতইপিঠা, পাকান পিঠা সহ কপি চা। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে চলে আর্কষণীয় র্যাফেল ড্র, র্যাফেল ড্র’তে ছিল কক্সবাজার, কুয়াকাটা ভ্রমণ সহ বিভিন্ন আইটেমের গিফট সামগ্রী।
দিনব্যাপী বন্ধু মিলন মেলায় অনুভূতি কথা ব্যক্ত করে আক্তারুজ্জামান সুমন বলেন, ছোট্ট একটি শব্দ ‘বন্ধু’, কিন্তু এর ব্যাপ্তি সীমাহীন, এর গভীরতা অনেক। বন্ধু মানে আস্থা, নির্ভরতা। বন্ধু মানে ভালোবাসা, যেখানে থাকে না কোনো স্বার্থ। বন্ধু হতে পারে যে কেউ। বন্ধুত্বের কোনো বয়স নেই। পারিপার্শ্বিক অবস্থা, সততা, সহমর্মিতা, সহযোগিতা, সমবেদনা, মনের অনুভূতি প্রকাশ, ভয়কে জয় করায় নির্ভরশীল সঙ্গী হলো বন্ধু।
পাবনার বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান রিপন বলেন, জীবন চলার পথে প্রত্যেকের জীবনে বন্ধু নামের বিশ্বাসী ও মজবুত একটি সম্পর্কের সৃষ্টি হয়ে যায়। যে সম্পর্ক কখনো লাভ অথবা ক্ষতির ভাবনায় গড়ে ওঠে না। কিছু মুহূর্ত আমাদের সামনে হাজির হয়ে যায়, যেখানে বন্ধুর গুরুত্ব অপরিসীম। যার কাছে মনের সব লুকানো কথা আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্গে খুলে বলা যায়। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে টেনে তোলা হয় বিপৎসীমা থেকে নিরাপদ স্থানে। ভুল সিদ্ধান্তের অন্ধকার হতে ফিরিয়ে আলোকিত পথের সন্ধান দেখায়।
পাবনার আটঘরিয়ার বন্ধু শিক্ষিকা মাহবুবা খাতুন মায়া জানান, সেই বিশ্বাসী সম্পর্কের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে বন্ধুত্বের আসনে বসিয়ে তাকে বন্ধু বলা যায়। বন্ধু হতে পারে এক থেকে একাধিক। আত্মার সঙ্গে আত্মার শক্তিশালী বন্ধন হলো বন্ধু। জীবন চলার পথে দুই প্রকার বন্ধু সামনে এসে দাঁড়ায়। সৎ বন্ধু ও অসৎ বন্ধু। সাদা মনের সৎ বন্ধু কখনো নিজ স্বার্থের ঝুলির দিকে তাকায় না। অসৎ ও বিকৃত মনের বন্ধু বুকে বুক মেলায় ঠিকই। কিন্তু তার এক হাত পিঠের ওপর রাখলে অন্য হাতে থাকে সুবিধাভোগী অস্ত্র।
অর্গানাইজিং কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান সাগর বলেন, আমি দেখেছি বন্ধুত্বের হাসিমাখা মুখ। তারা খুব আন্তরিক ও সহানুভূতিশীল। সময়–সুযোগমতো সবাই একসঙ্গে আড্ডা দেয়। হাসি–ঠাট্টায় সবাই জমিয়ে রাখে আড্ডার আসর। গরম চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে জীবন চলার পথের অভিজ্ঞাতা আদান–প্রদান করা হয়। আবার কখনো কখনো সমসাময়িক জীবন নিয়ে আগামীর ভাবনাগুলো জানতে চাওয়া হয়।
দীর্ঘ আড্ডায় হাসি–ঠাট্টার পাঠচক্রের ইতি টেনে ফিরে যাই যার যার ঠিকানায়। সুখে-দুঃখে সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে পাশে থাকুক বিশ্বস্ত হয়ে বন্ধুত্বের হাত। অনন্তকাল ভালোবাসার বন্ধনে মজবুত হয়ে থাকুক আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন।
অর্গানাজিং কমিটির আহবায়ক প্রফেসর আবু সাঈদ বলেন, বন্ধুত্ব ব্যাপারটা সব সম্পর্কের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন। বন্ধত্ব সম্পর্ককে সহজ করে। বলে কয়ে তো আর বন্ধুত্ব হয় না। মনের সঙ্গে মনের মিল হলেই শুধু সত্যিকারের বন্ধুত্ব হয়। অঘাত বিশ্বাস, ভালোলাগা-মন্দলাগার সবটুকুই বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বে নেই অহংকার, নেই হিংসা, আছে শুধু নির্ভরতা, ভালোবাসা।
বন্ধু দিবসের এই শুভক্ষণে পৃথিবীর সব বন্ধুত্ব অটুট থাকুক চিরকাল। ভালো থাকুক সব বন্ধুরা। শৈশবের দূরন্তপনার বন্ধু, স্কুল জীবনের উচ্ছ্বলতার বন্ধু, কলেজের সবকিছু রঙিন চশমায় দেখা বন্ধু, হারিয়ে যাওয়া বন্ধু-সবাই ভালো থাকুক। বন্ধুরা যত্নে থাকুক মনের চৌকাঠে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন