পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিলো মেধাবী শিক্ষার্থী হ্যাপীর স্বপ্ন

জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপীর স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার। সেই স্বপ্ন পূরণকে এগিয়ে নিতে ভর্তি হন সাতবাড়িয়া কলেজে।

কিন্তু শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে বই কিনে সুজানগর বাজার থেকে নিজ বাড়ি সাতবাড়িয়া যাওয়ার পথে স্থানীয় মানিকদীর মাদরাসার সামনে যাত্রীবাহী ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেলের চাকায় পিষ্ট হয়ে তার মৃত্যু হয়। সেই সাথে সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নযাত্রার ইতি ঘটে তার।

জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপী পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের তারাবাড়িয়া গ্রামের আবু হোসেন বাবু’র মেয়ে।

সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেত বাচ্চু জানান, নিহত জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপী তার প্রতিষ্ঠানের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী এবং তার শ্রেণি রোল ছিল (০১)।

হ্যাপীর পিতা আবু হোসেন বাবু কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, নিজের স্বপ্ন ও মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করার প্রত্যয় নিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপী মানবিক শাখা হতে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

মেয়েটা অনেক মেধাবী ছিল। ভাল রেজাল্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল। সে আমাদের আশা ভরসার জায়গা ছিল। তার মৃত্যুতে আমাদের সব আশা শেষ হয়ে গেছে।

তাকে নিয়ে আমাদের স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়া। সে আমার ও তার মাকে স্বপ্ন দেখিয়ে কেন চলে গেল? আমাদের একা রেখে তো এভাবে যেতে পারেনা আমার কলিজা।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শেষ করে মানুষের মত মানুষ হয়ে বাড়ি আসার কথা থাকলেও আমার সন্তান এসেছে কফিনবন্দী হয়ে এ্যাম্বলুন্সে করে।

এদিকে মেধাবী ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপীর এমন মৃত্যুতে এলাকাবাসী ও কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মেধাবী এ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সোলাইমান হোসেন, সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের সভাপতি এস কে হাবিবুল্লাহ ও অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেত বাচ্চু গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

সুজানগর থানার অফিসার ইনচার্জ জালাল উদ্দিন জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ পাওয়া যায়নি।