পাবনার ঈশ্বরদীতে ৩টি গোডাউন নকল সার-কীটনাশক ফেলে পালালেন মালিক ও শ্রমিক
পাবনার ঈশ্বরদীতে ৩টি গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণ ভেজাল সার ও কীটনাশক জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা ওই ৩টি গোডাউনে অভিযান চালানো হয়।
ঈশ্বরদী উপজেলার আই.কে রোডের সলিমপুর ডিগ্রি কলেজের পাশে অবস্থিত ওই ৩টি গোডাউন। জহুরুল ইসলাম, আব্দুল হালিম ও মাসুদ রানা নামে ৩ ব্যক্তি ৩টি গোডাউন ভাড়া নিয়ে নকল সার ও কীটনাশক উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণ করে আসছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, গোডাউনগুলো থেকে কৃষি কেয়ার, রাফি ফার্টিলাইজার, এক্সপোর্ট ফার্টিলাইজার, রিয়েল ফার্টিলাইজার নামের বেশ কয়েকটি কোম্পানীর নাম দিয়ে ৯৯৫ বস্তা সার ও ১৪শ ৪০ কেজি প্যাকেটজাত জিপসাম (মুক্তা জিপসাম, সুপার জিপসাম নাম মুদ্রিত), ৫০০ কেজি বোরণ, (সেলুলোজ বোরণ, বিজলী বোরণ নাম মুদ্রিত), ১৭৮ বোতল ভিটামিন (ভিটামিন মিক্স নামে মুদ্রিত), ৮১০ বোতল কীটনাশক (প্লাস কমপ্লেক্স নামে মুদ্রিত), ৪২০ বস্তা লবণসহ সেফরন দানাদার, স্টার মেগা সালফার নামের বিভিন্ন সার ও কীটনাশক জব্দ করা হয়। এ ৩জন ব্যবসায়ী বিভিন্ন কোম্পানীর স্টিকার লাগিয়ে নকল সার ও কীটনাশক বাজারজাত করে আসছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে আরো জানা গেছে, অন্তত ৩০ রকমের ভেজাল কীটনাশক ও সার রয়েছে এসব গোডাউনে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্টিকার লাগিয়ে নকল সার ও কীটনাশকের বাজারজাত হয়ে আসছিল। নকল সার ও কীটনাশক মজুদের পাশাপাশি স্থানীয় ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে নকল সার ও কীটনাশক চাষীদের কাছে বিক্রি করাও হচ্ছিল। মূল্য তলিকা অনুযায়ী এসব ভেজাল সার-কীটনাশক বিক্রি হতো ৪০ লাখ টাকায়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান বুঝতে পেরে গোডাউনের মালিক-শ্রমিকরা পালিয়ে যান বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পি.এম ইমরুল কায়েস এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযান শেষে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩টি গোডাউন সিলগালা করে দেন।
এদিকে এ অভিযানে স্থানীয় কৃষকরা আনন্দিত বলে তারা জানিয়েছেন। বুধবার রাতে উপজেলার বেশ কিছু চাষীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে ঈশ্বরদীতে ভেজাল সার-কীটনাশকের কথা বলে আসছিলেন। কিন্তু কোনো অভিযান পরিচালনা না হওয়ায় ভেজাল ব্যবসা রমরমা চলছিল। চাষীরা এসব ভেজাল সার-কীটনাশক ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছিলেন। তারা এ অভিযান অব্যাহত রাখা ও ভেজাল কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন