পাবনায় বিরিয়ানি খেয়ে কলেজের ৪২ শিক্ষার্থী অসুস্থ! বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
পাবনার শহরের আব্দুল হামিদ সড়ক সংলগ্ন ‘পুরান ঢাকার নান্না বিরিয়ানি হাউজ’ নামের একটি রেস্টুরেন্টের বিরিয়ানি খেয়ে পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ৪২ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
অসুস্থদের মধ্যে ১৫ জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে রোববার (২৮ আগস্ট) বিকেলে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।
রোববার বিকেল ৩টার দিকে পুরান ঢাকার নান্না বিরিয়ানি হাউজের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। অভিযুক্ত রেস্টুরেন্ট মালিকের শাস্তি ও ভেজালমুক্ত খাদ্য পরিবেশনের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগাণ দেন তারা। প্রায় ঘণ্টা ধরে অবস্থান নেওয়ার পরে প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা কলেজে ফিরে যান।
সুমাইয়া, সেতু, আল-আমিন, মৌ, শারমিন, ফাতিমাসহ বিক্ষোভ অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার কলেজের ফরিদা আবাসিক ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের ফিক্সড (স্পেশাল আয়োজন) মিলের আয়োজন করা হয়েছিল। এজন্য ৪২টি বিরিয়ানির অর্ডার দেওয়া হয়। রাতে সেগুলো শিক্ষার্থী খেয়ে একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ১৫ জনের অবস্থার অবনতি হলে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আসলে ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার নান্না বিরিয়ানির চমকপ্রদ নাম ব্যবহার করে পাবনার প্রায় সব রেস্টুরেন্টে প্রতারণা করা হচ্ছে। এসব হোটেল মালিকরা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের তদারকির অভাবে ইচ্ছেমতো ব্যবসা করে যাচ্ছেন।
তারা বলেন, আজকে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল অসুস্থ অনেক শিক্ষার্থীর, কিন্তু তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। পুরান ঢাকার নান্না বিরিয়ানি হাউজের এমন কাণ্ডে তাদের শিক্ষাজীবনই হুমকির মধ্যে পড়ে গেল। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করব।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পুরান ঢাকার নান্না বিরিয়ানি হাউজের ম্যানেজার সজিব হোসেন বলেন, ‘গতকাল আমরা প্রায় ২০০ মানুষের বিরিয়ানি আয়োজন ও বিক্রি করেছি। কিন্তু কেউ অভিযোগ দেইনি। এখন এই শিক্ষার্থীরা কীভাবে অসুস্থ হলে আমরা বলতে পারছি না।’
এর আগেও প্রায় ৭০ জন এই রেস্টুরেন্টের বিরিয়ানি খেয়ে অসুস্থ হয়েছিল। এছাড়াও ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার নান্না বিরিয়ানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার নান্না বিরিয়ানির তাদের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। শুধু মানুষের নজর কাড়তে ব্যবহার করেছি। আর এর আগে ৭০ জন অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি আমাদের মনে নেই।’
পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ফরিদা হলের প্রভোস্ট কামাল হোসেন বলেন, ‘গতকাল বিরিয়ানি খেয়েই একে একে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে আমরা বিষয়টি জানালে পাবনার খাদ্য নিয়ন্ত্রক পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে লোক আসছিল। তারা আমাদের এখানে এসে তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। এছাড়াও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
পাবনার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নতুন এসপি স্যারের আগমন নিয়ে ব্যস্ত আছি। তবে ঘটনা শুনেছি। আমরা শিক্ষাথীদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেয়ে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, পাবনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি শুনেছি। ইতোমধ্যেই খাদ্য নিয়ন্ত্রক পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে লোক পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই এসব হোটেলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে এবং আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন