পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া তহুরা সুলতানা

টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত এক হাজার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করলেন তাহুরা সুলতানা রেখা।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে এসে ভ্রমণ শেষ করেন। জানা যায়, গত বছরের ২৯ নভেম্বর সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জিরো পয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরু করেন তিনি। ৫১ দিনে ১ হাজার কিলোমিটার পথ পারি দিয়েছেন পায়ে হেঁটে। একা হাঁটলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে পথে পথে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই।

তাহুরা সুলতানা চট্টগ্রামের বাঁশখালী গন্ডামারা ইউনিয়নের রশিদ আহমেদ ও তৈয়বা খাতুন দম্পতির মেয়ে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট। চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন।

তাহুরা সুলতানা জানান, পরিবারে আমিই সবার ছোট। শৈশব থেকেই পছন্দ ঘোরাঘুরি করার। যেকোন চ্যালেঞ্জিং বিষয় নিতে ভালো লাগে। সে হিসেবেই হেঁটে দেশভ্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিই। দীর্ঘ এ ভ্রমণে যেখানে বিরতি নিয়েছি সেখানে মানুষের ভালোবাসা ও স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়ে আমি সত্যিই অভিভূত।

তাহুরা জানান, দেশের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি মানুষকে হাঁটায় উদ্বুদ্ধ করতেই তাঁর এই যাত্রা। তাঁর এই পদযাত্রার খরচও বহন করছেন নিজে। ‘জুম ওয়াইল্ড’ নামে তাঁর একটি ট্রাভেল এজেন্সি আছে। সেই সঙ্গে পর্যটন সংক্রান্ত পণ্য সামগ্রীর একটি দোকান আছে। সেখান থেকে অর্জিত অর্থ জমিয়ে এ পদযাত্রায় নেমেছেন।

তাহুরা বলেন, তাঁর ‘সাগর থেকে হিমালয়’ নামের প্রকল্পের অংশ হিসেবে ক্রস কান্ট্রি হাইকিংয়ের তিনটি পর্ব ছিল। এর মধ্যে ২৯ নভেম্বর টেকনাফ থেকে শুরু করে হেঁটে যমুনার পাড়ে আসেন। যমুনা সেতুতে তিনি হাঁটার অনুমতি না পেয়ে ১৬ ডিসেম্বর তিনি সাঁতরে যমুনা নদী পার হন। সেখান থেকে প্রথম পর্ব শেষ করে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো নারী অভিযাত্রী দলের সদস্য হিসেবে তিনি শীতকালীন হিমালয় অভিযানে নেপালে চলে যান। সেখানে ২৫ দিন থেকে আবারও বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সেটি ছিল এ অভিযানেরই দ্বিতীয় পর্ব। এরপর তৃতীয় পর্বে গত ১৮ জানুয়ারি তিনি যমুনার পাড় থেকে আবারও হাঁটা শুরু করেন। সর্বশেষে তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় হেঁটে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে পৌঁছান।
তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে পৌছে ভ্রমণ শেষ করার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তাহুরা বলেন, তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে এসে ১ হাজার কিলোমিটার মাইলফলক শেষ হলো।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি বলেন, তাহুরা সুলতানার পদযাত্রা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণার। তাকে দেখে তরুণ প্রজন্ম সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটতে উদ্বুদ্ধ হবেন বলে আশা করি। এ ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রমকে পৃষ্ঠপোষকতা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।