পালিয়ে দুবাই গেছেন প্রাক্তন থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক!

থাইল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা দেশ থেকে পালিয়ে দুবাই গেছেন।

শুক্রবার দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় তার অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন খবর প্রকাশিত হয়। এ মামলায় ১০ বছরের জেল খাটার মুখে ছিলেন তিনি।

শুক্রবার রায়ের দিন জানাজানি হয়, দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ইংলাক। কিন্তু কোথায় গেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানীয় সময় শনিবার সকালে তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা জানান, তিনি দুবাই গেছেন।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে থাইল্যান্ড ছেড়েছেন ইংলাক। প্রথমে তিনি কম্বোডিয়া যান। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে দুবাই পৌঁছেছেন।

দুবাইয়ে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে রয়েছেন ইংলাকের ভাই ও থাইল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। ২০০৮ সালে জেল খাটার ভয়ে তিনি দুবাই পাড়ি জমান। সেখানে তার নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। ইংলাকের মতো তিনিও সামরিক বাহিনীর হাতে ক্ষমতা হারান। এখন ক্ষমতাচ্যুত দুই ভাই-বোন দুবাইয়ের একই আশ্রয় থাকছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ নেতা দাবি করেছেন, ‘তারা জেনেছেন তিনি (ইংলাক) প্রথমে কম্বোডিয়া যান এবং সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে দুবাই গেছেন। তিনি নিরাপদে দুবাই পৌঁছেছেন এবং সেখানে অবস্থান করছেন।’

থাইল্যান্ড জাতীয় পুলিশের উপপ্রধান জেনারেল শ্রীভারা রাংসিব্রাহ্মনাকূল জানিয়েছেন, ইংলাকের দেশ ত্যাগের কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই এবং তিনি কোথায় অবস্থান করছেন, সে সম্পর্কেও তাদের কিছু জানা নেই।

দুবাইয়ে যেখানে থাকসিন সিনাওয়াত্রা থাকেন, বিলাশবহুল সেই বাড়িতে রয়টার্সের এক প্রতিবেদককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। থাকসিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে দুবাইয়ে তার এক মুখপাত্র এ বিষয়ে সাড়া দেননি।

চাল কেনাবিষয়ক এক দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার আদালতের রায় দেওয়ার আগে সেখানে জড়ো হয় ইংলাকের ৩ হাজারের বেশি সমর্থক। ইংলাক হাজির না হওয়ায় রায় ঘোষণা করেননি আদালত। ২৭ সেপ্টেম্বর রায়ের নতুন দিন ধার্য করা হয়। পরে ইংলাককে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

রায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে ইংলাকের ১০ বছরের জেল হতে পারত। শুক্রবার একই ধরনের একটি মামলায় ইংলাকের বাণিজ্যমন্ত্রীর ৪২ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।

২০১৪ সালে থাই প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সামরিক বাহিনী। কিন্তু থাইল্যান্ডে সিনাওয়াত্রারা রাজনৈতিকভাবে খুবই জনপ্রিয়। ২০০১ সাল থেকে প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসছে তারা। দেশটির উত্তর ও উত্তর-পূর্বের গ্রামাঞ্চলে এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় সিনাওয়াত্রা পরিবার। তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।