পাহাড়ের স্বকীয়তা বজায় রেখে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে

ভু-পৃষ্টের স্থলভাগের এক চতুর্থাংশ পর্বতময় এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ পার্বত্যবাসী। মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সুপেয় পানির ৫০ শতাংশের উৎস পার্বত্য অঞ্চলে। মানুষের জীবন-জীবিকা ও পানির অন্যতম উৎস পাহাড়। মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে পাহাড়ের ভূমিকা অপরিসীম। পাহাড়কে কেন্দ্র করে পর্যটনের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পাহাড়ের স্বকীয়তা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

রবিবার আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস উপলক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সফিকুল আহম্মদ।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য কমিশনের সচিব সুদত্ত চাকমা।

সচিব আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, ভূমিধ্বস, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি জমির অপ্রতুলতা, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ইত্যাদি কারণে পিছিয়ে পড়া পার্বত্যবাসীর জীবনধারা এবং জলবায়ু ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাহাড়-পর্বতের অবদান ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন সংস্থাসমূহ বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ সকল কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সাত লক্ষ পঁচিশ হাজার বৃক্ষ রোপণ।

সুদত্ত চাকমা তাঁর প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, জনজীবনে পর্বতের গুরুত্ব উপলব্ধি করে ২০০২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ প্রতিবছর ১১ ডিসেম্বর “আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস” পালনের ঘোষণা দেয়। আমাদের দেশে ৭ম বারের মত দিবসটি সরকারিভাবে পালনের উদ্যোগ নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এবারের আন্তর্জাতিক পর্বত দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে “Mountain Biodiversity”। এ বছরের আন্তর্জাতিক পর্বত দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ে পর্বত ও পর্বতের জীববৈচিত্র রক্ষা, এগুলোর সফল ব্যবহার, তথা পর্বতের আসল রুপ, অলংকার ধরে রাখার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের জীবন অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। পাহাড় থেকে আমরা বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন পাই, পাহাড় জীববৈচিত্র রক্ষা করে। যত্রতত্র পাহাড় ও বন উজাড়ের কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত সচিব ড. মোহা: শেখ রেজাউল করিম।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নুরুজ্জামান, ঢাকায় বসবাসরত পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীবৃন্দ ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
তথ্যবিবরণী-পিআইডি