পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে সহকর্মীকে হত্যা, অভিযুক্ত আটক

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় কারখানার ভেতরে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে দেওয়ায় এক শিশুশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই শিশুর নাম অপু। শনিবার ভোরে উপজেলার কেওয়া দক্ষিণখণ্ড গ্রামেরআনোয়ারা মান্নাফ টেক্সটাইল কারখানার রিং সেকশনে কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ভোরে আশিক, অপু, রাজুসহ কয়েকজন শিশুশ্রমিক কাজ করছিল। ভোর পৌনে ছয়টার দিকে কাজ শেষ করার পূর্ব মুহূর্তে অপুর পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে দেয় রাজু। এসময় অপু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাজুকে আটক করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ।

নিহত অপু মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার পূর্ব শিয়ালদি গ্রামের পলাশ দেওয়ানের ছেলে।সে তার বাবা-মায়ের সাথে কেওয়া দক্ষিণখন্ড গ্রামের আ. সামাদের বাড়িতে ভাড়া থেকে ওই কারখানায় চাকরি করতো।

অভিযুক্ত রাজু দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানার মধ্যপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ জনাব আলীর ছেলে। সে অপুর সাথে একই কারখানায় চাকরি করতো।

নিহত অপুর মা জোসনা খাতুন জানান, চার মাস আগে অপু ওই কারখানায় সাড়ে চার হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেয়। শুক্রবার রাত দশটায় অপু কারখানায় কাজ করতে যায়। সকালে ডিউটি শেষের পথে তার সহকর্মী রাজু তার পায়ুপথে হাওয়া মেশিন এর পাইপ ঢুকিয়ে দেয়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং পেট ফুলে যায়।

অপুর সঙ্গে কর্মরত প্রত্যক্ষদর্শী শিশুশ্রমিক আশিকুর জানায়, তাদের ছুটির কয়েক মিনিট আগে রাজু অপুর পায়ুপথে হাওয়া মেশিন এর নল দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে দেয়। এতে তার পেট ব্যথা শুরু হলে সে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার জাবেদ পাটোয়ারী জানান, সকাল সাতটার দিকে পেট ফোলা অবস্থায় ওই শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে জানতে কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আজমির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত শিশু রাজুকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।