পুতিনের বিরুদ্ধে প্লেবয় কন্যা
আসছে ২০১৮ সালে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ওই নির্বাচনে আবারো প্রার্থী হবেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কখনো বা প্রধানমন্ত্রী, কখনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দীর্ঘ ১৮ বছর রাশিয়ার নেতৃত্বে থাকা লৌহমানবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির রিয়েলিটি টিভি তারকা ও সাংবাদিক কেসেনিয়া সবচাক।
৩৫ বছর বয়সী কেসেনিয়া একাধারে অভিনেত্রী, টিভি উপস্থাপক ও মডেল। রুশ প্লেবয় সাময়িকীর প্রচ্ছদকন্যা হয়েছেন।
কেসেনিয়া সবচাক রিয়েলিটি শো ‘বিগ ব্রাদার’-এর রুশ সংস্করণ ‘ডোম ২’ এর উপস্থাপিকা হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন। এরপর ‘দ্য গুড লাইফ অফ এ ব্লন্ড’ নামে নিজের একটি রিয়েলিটি শো-তে অংশ নেন।
গ্ল্যামার জগতের ব্যক্তি হলেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার যোগাযোগ সহজ ছিল। নারী বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘গ্ল্যামার’-এর রুশ সংস্করণের কাভারে তাকে দেখা গেছে। তাকে অনেকে ‘রাশিয়ার প্যারিস হিল্টন’ বলে আখ্যায়িত করেন।
সবচাকের বাবা সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রথম নির্বাচিত মেয়র ছিলেন। সেই সময় তার ডেপুটি হিসেবে কাজ করেছেন রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সবচাকের মা’ও একজন রাজনীতিবীদ। তিনি রাশিয়ার বর্তমান সংসদের উচ্চকক্ষের একজন সদস্য।
রুশ এক দৈনিকে লেখা চিঠিতে ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমার অংশ নেয়া দেশের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া হতে পারে,’ চিঠিতে লিখেন তিনি।
সেপ্টেম্বর মাসে ক্রেমলিন সূত্রের বরাত দিয়ে এক রুশ দৈনিক জানায়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার সময় পুতিনের জন্য একজন নারী প্রার্থী খোঁজা হচ্ছে। এক্ষেত্রে যে কয়জন সম্ভাব্য নারীর নাম প্রতিবেদনে এসেছিল তার মধ্যে সবচাকও আছেন। তাই তিনি যখন প্রার্থীতা ঘোষণা করেন, তখন বিতর্ক তৈরি হয়।
ঐ প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সবচাক বলেন, দেশের প্রেসিডেন্ট প্রশাসনের সঙ্গে তার কোনো সংযোগ নেই। তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন বলছে, সম্প্রতি পুতিনের সঙ্গে সবচাকের একটি বৈঠক হয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র অবশ্য এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
২০১১ সালে রাশিয়ায় সংসদ নির্বাচনের আগে যে সরকারবিরোধী আন্দোলন হয়েছিল তাতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন সবচাক (ছবিতে তাকে দেখা যাচ্ছে)। সেই সময় তার কাজ দিয়ে তিনি তার সৎ উদ্দেশ্য সম্পর্কে মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান সবচাক। বিক্ষোভের সময় তার চাওয়া ছিল, স্বাধীন গণমাধ্যম ও বিচারব্যবস্থা।
২০১২ সালের বিক্ষোভের পর সবচাক রাজনীতি বিষয়ক বিভিন্ন টক শো উপস্থাপনা শুরু করেন। বিরোধীদের মতবাদ তুলে ধরা এক টিভি চ্যানেলে তার একটি অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে একটি ফ্যাশন ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বিলিওনেয়ার মিখাইল প্রখোরভ। সরকারবিরোধীদের রাজনৈতিক হতাশা অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টায় ক্রেমলিনই প্রখরভকে নির্বাচনে এনেছিল বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। ২০১৮-র নির্বাচনে সবচাকও সেই ভূমিকায় আবির্ভূত হবেন কিনা তা সময়ই বলে দেবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন