পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধ করলো ভারত
পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ করেই ভারত থেকে বন্ধ করা হলো বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে ব্যবহৃত জরুরি অক্সিজেন আমদানি। যে কারণে দেশের চিকিৎসাখাতে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। দেখা দিয়েছে অক্সিজেন সংকট। এ সংকট দীর্ঘায়িত হলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
গত ২১ এপ্রিলের আগে এক সপ্তাহে ৪৯৮ মেট্রিক টন অক্সিজেন ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। ব্যবসায়ীদের আশা, বাণিজ্যিক সম্পর্কের জায়গা থেকে নয় এই ক্রান্তিকালে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সূত্র ধরে হলেও ভারত সীমিত পরিসরে অক্সিজেন রপ্তানি সচল রাখবে।
জানা গেছে, প্রতি মাসে শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়েই প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন অক্সিজেন আমদানি হয়ে থাকে। গত বছর থেকে অক্সিজেনের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। দেশের চিকিৎসা খাতে অক্সিজেনের চাহিদার বড় একটি অংশ আমদানি হয় ভারত থেকে। কিন্তু হঠাৎ করে তাও বন্ধ হয়ে গেল।
আমদানিকারকরা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলছেন, সংকটের কারণে ভারতীয় অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধে তাদের চাপ রয়েছে। তাই করোনাকালীন ভারত ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা ভেবে বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি সাময়িক বন্ধ করেছে।
দেখা গেছে, অক্সিজেন বহনকারী ট্যাংকগুলো কয়েক দিন ধরে বেনাপোল বন্দরে অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। হঠাৎ করে আমদানি বন্ধ হয়ে পড়ায় যেমন ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তেমনি দেশের চিকিৎসা খাতও বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়লো।
অক্সিজেন পরিবহনকারী বাংলাদেশি ট্রাক চালকরা জানান, গত চার দিন ধরে বেনাপোল বন্দরে ট্রাক নিয়ে তারা দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ভারত থেকে কোনো অক্সিজেন বন্দরে প্রবেশ করেনি।
অক্সিজেন আমদানিকারকের প্রতিনিধি সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ রাকিব হোসেন জানান, ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা তাদের জানিয়েছেন সংকটের কারণে তারা বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি করতে পারছেন না। এছাড়া রপ্তানি না করার বিষয়ে ভারত সরকারেরও কিছুটা চাপ রয়েছে।
বাংলাদেশ ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপ চলছে। এতে আক্রান্ত ও মৃত্যের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন গুরুত্বপূর্ণ। ভারতে অক্সিজেন স্বল্পতা থাকলেও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্প্রীতি ও বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশি দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে তরল অক্সিজেন দেবে আশা রাখি।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বাংলাদেশে চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রায় সবকিছুই আসে ভারত থেকে। হঠাৎ বন্ধে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবে আমরা আশা করছি বন্ধুত্বের সূত্র ধরে ভারত সরকার করোনার এ সময়ে অল্প করে হলেও বাংলাদেশে অক্সিজেন সরবরাহ সচল রাখবে। বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, ২১ এপ্রিলের আগে ৪৯৮ মেট্রিক টন অক্সিজেন ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে এসেছে। এরপর আর অক্সিজেন আসেনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন