পেনশন না ভালবাসা! কিসের টানে মৃত মাকে আগলে রাখল ছেলে?
তিন বছর ধরে মায়ের মৃতদেহ আগলে রেখেছেন শুভব্রত মজুমদার (৪৫)। লেদার টেকনিশিয়ান শুভব্রতর এহেন কাণ্ডে কার্যত হতবাক গোয়েন্দারা। বুধবার গভীর রাতে কলকাতার বেহালায় অভিযান চালিয়ে থ বনে যায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার তদন্ত আগ বাড়ার সঙ্গেই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এ নজিরবিহীন ঘটনায় তোলপাড় মহানগর। তা কেন মায়ের দেহ ফ্রিজে রেখেছিলেন শুভব্রত?
অভিযোগ, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে মায়ের পেনশন পেতেই এই ফন্দি করেন শুভব্রত। যোগসাজশে সামিল তার বাবা গোপাল মুখোপাধ্যায়ও। মৃত মায়ের দেহ সংরক্ষণ করে তার আঙুলের ছাপ নিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতেন শুভব্রত। দেহে পচন ধরলে তা সম্ভব হত না। ফলে রীতিমতো ‘মমি’ বানিয়ে মাকে ফ্রিজে রাখেন তিনি। এইভাবে দিনের পর দিন ব্যাংক থেকে পেনশন তুলে যাচ্ছিলেন বাবা-ছেলে। মৃতদেহে যাতে কোনও বিকৃতি না ঘটে, তাই একেবারে বিশেষজ্ঞদের ধাঁচে মায়ের পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বের করে রাসায়নিক মাখিয়ে দেহ বড় ফ্রিজারে ঢুকিয়ে রাখেন শুভব্রত।
জানা গেছে, তদন্তকারীদের প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন শুভব্রত। কোন ব্যাংক থেকে পেনশন তোলা হত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এক্ষেত্রে ব্যাংকের ভূমিকা নিয়ে চলবে তদন্ত।
মার প্রতি অত্যাধিক টানের জন্যই দেহ আগলে রেখেছিলেন শুভব্রত- এই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।
২০১৫-র ৭ এপ্রিল হার্ট অ্যাটাকে মারা যান বীণা মজুমদার। তার ডেথ সার্টিফিকেট জারি করে বেহালার বালানন্দ হাসপাতাল। তারপর সেই দেহ বাড়ি নিয়ে আসেন শুভব্রত। তিনি বাবাকে বোঝান যে, বিজ্ঞানের একদিন এমন উন্নতি হবে যে, মায়ের মৃতদেহে প্রাণ ফিরে আসবে। সেই জন্যই দেহ সংরক্ষণ করা দরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপত্তাহীনতা ও মায়ের প্রতি অগাধ আস্থা এই কাণ্ড ঘটাতে পারে। সব মিলিয়ে রহস্য আরও ঘন হয়ে উঠেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন