প্রথমে প্রেমের ফাঁদ, পরে বিমানে পাঠিয়ে দেহব্যবসা

নারী পাচার চক্রের মূল হোতা সাগর লস্কর। তরুণীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে দেহব্যবসা করানোই তার কাজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজের পাতা ফাঁদেই ধরা পড়েছে এই দুর্বৃত্ত।

সাগরের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী এলাকায়। প্রায় ১০ বছর আগে সে গুজরাটের নারদা থানা এলাকায় যায়। এলাকা থেকে মেয়েদের বেশি বেতনের চাকরির লোভে আবার কাউকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সেখানে নেয় যেত সে। খবর আনন্দবাজার’র।

অভিযোগ পেয়ে সাগরকে তার কায়দায় ফাঁদে ফেলার কৌশল নেয় পুলিশ। বনগাঁ এলাকার পরিচয় দিয়ে এক তরুণী তাকে ফোন দেয়। আর তরুণীর ফোন পেয়েই প্রেমের অভিনয় শুরু করে সাগর।

এরপর বনগাঁ থেকে গুজরাট রোজই চলে কথাবার্তা। একপর্যায়ে ওই তরুণী সাগরের সঙ্গে দেখা করতে চান। স্থান ঠিক হয় ক্যানিং। কিন্তু ক্যানিংয়ে এলেই যে পুলিশের জালে ধরা পড়বে নারী পাচার চক্রের এই হোতা, তা স্বপ্নেও হয়তো সে ভাবেনি।

কয়েকদিন আগে এভাবেই প্রেমের জালে ফেলে নারী পাচার চক্রের মূল হোতা সাগরকে ক্যানিং থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ঘটনায় কাজলি দাস নামে এক নারীকেও গ্রেফতার করা হয়।

এরআগে সাগরের ফাঁদে পড়া বনগাঁর এক কলেজ পড়ুয়া তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া তরুণীই আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন। তরুণীই পুলিশকে ওই চক্রের সম্পর্কে সব জানান। এরপর শুরু হয় সাগরকে গ্রেফতারের অভিযান।

ওই তরুণী জানান, প্রেমের টোপ দিয়ে সাগর অনেক তরুণীকেই এভাবে নিয়ে যেত। এরপর তাদের নামানো হতো দেহব্যবসায়। শুধু তাই নয়, বিমানের টিকিট কেটেও তরুণীদের পাঠানো হতো দেহব্যবসার কাজে।

তিনি জানান, বনগাঁর কাজলি এই কাজে সাগরকে সাহায্য করত। কাজলি মেয়েদের সঙ্গে ফোনে সাগরের পরিচয় করিয়ে দিত। সাগর প্রেমের অভিনয় করে, বিয়ে করে মেয়েদের গুজরাট নিয়ে যেত। এরপর তাদের নামানো হতো দেহব্যবসায়। আর এ কাজে রাজি না হলে চলত নির্মম নির্যাতন।

জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতরা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো কারা ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’