‘প্রথমে ভেবেছিলাম কেউ মজা করছে’

পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে ভূমিকার জন্য এবার শান্তিতে নোবেল পেল ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উয়েপন্স’ (আইক্যান)। শুক্রবার নরওয়েজিয়ান কমিটির ঘোষণায় বলা হয়, পরমাণু বোমার ভয়াবহ প্রভাবের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে আইক্যান। নোবেল কমিটির আশা, পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার লড়াই গতি পাবে এ পুরস্কারের মাধ্যমে।

আইক্যানের পুরস্কার প্রাপ্তির খবর সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বিট্রিস ফিনকে ফোন করে জানায় নোবেল কমিটি। স্বপ্নের মতো এ খবর শুনে কেমন লেগেছিল জানতে চাইলে ফিন বলেন, ‘খবরটি শুনে প্রথমে ভেবেছিলাম কেউ মজা করছে। সত্যিই নোবেল পেয়েছি, বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য ১৯৪৫ সাল থেকে যারা অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের সবার জন্য এটি খুশির খবর। আর পরমাণু পরীক্ষার ভুক্তভোগীদের জন্য এটি বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি।’

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বেরিট রেইজ অ্যান্ডারসন বলেন, বিশ্বে এখন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি আগের চেয়ে বেশি। কিছু দেশ তাদের পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার আধুনিক করছে। আর উত্তর কোরিয়ার মতো কিছু দেশ এ অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। এর আগে আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে স্থলমাইন, ক্লাস্টার বোমা, রাসায়নিক ও জীবাণু বোমা নিষিদ্ধ করা গেছে। পরমাণু বোমা অনেক বেশি ধ্বংসাত্মক হলেও এক্ষেত্রে শূন্যতা ছিল। সেটি পূরণ করেছে আইক্যান।

প্রতি বছর ৬ ক্যাটাগরিতে নোবেল দেয়া হলেও আলোচনা-সমালোচনা বেশি হয় নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়েই। এ বছর ৩১৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মনোনয়ন পেয়েছিলেন সবচেয়ে অভিজাত এ পুরস্কারের জন্য।

গত জুলাই মাসে আইক্যানের উদ্যোগে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধের চুক্তি করে ১২২ দেশ। কোনো পরমাণু শক্তিধর দেশের সম্মতি নেই বলে এ চুক্তির সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেকের। তবে নোবেল কমিটি মনে করছে, শান্তির পুরস্কার গতি আনবে পরমাণু অস্ত্রবিরোধী আন্দোলনে।

২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হয় আইক্যানের পথচলা। মাত্র ১০ বছরের মাথায় নোবেল প্রাপ্তিতে কিছুটা অবাক এর কর্মীরা। বিষয়টিকে পরমাণু অস্ত্রবিরোধী আন্দোলনের সাফল্য হিসেবে দেখছেন তারা। সূত্র: যমুনা টেলিভিশন।