প্রধান বিচারপতিকে কটূক্তি: ব্র্যাকের আফসানকে গ্রেফতারে নোটিশ
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও বিচারাধীন বিষয়সহ দেশের বিভিন্ন আলোচিত ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে মিথ্যাচারের কারণে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আফসান চৌধুরীকে তথ্য প্রযুক্তি আইনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার চেয়ে নোটিশ দিয়েছেন এক আইনজীবী।
স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার, ডিবি কার্যালয়, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, গুলশান জোনের ডিসি, ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট, গুলশান ও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়। এ ছাড়াও সাধারণ অবগতির জন্য প্রধান বিচারপতি ও তথ্য মন্ত্রণালয় সচিবকেও নোটিশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এসএম জুলফিকার আলী জুনু সোমবার এ নোটিশটি পাঠান।
নোটিশে বলা হয়, ফেসবুকে আফসান চৌধুরীর কটূক্তিমূলক মন্তব্য ও মিথ্যাচারের কারণে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। যা আদালত অবমাননার সামিল।
নোটিশে আফসান চৌধুরীর ফেসবুকের মন্তব্যটিও তুলে দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘সিনহা ভাই, মূর্তি সরায়ে নিল রোজার আগে। হেফাজতের মুখ বন্ধ হয়ে গেল। জুম্মার খোদবার (খুতবা) সাবজেক্ট নতুন কুরে (করে) খুঁজতে হবে আর ষোড়শ সংশোধনীর মামলা চলতেই থাকল। তাহলে হাফ-টাইমে স্কোর কি?’
দেশের প্রধান বিচারপতি ও বিচারাধীন বিষয়সহ দেশের বিভিন্ন আলোচিত ঘটনা নিয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আফসান চৌধুরীর এ ধরনের মিথ্যাচার দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মানহানি ঘটিয়ে তথ্য প্রযুক্তি আইনের অপরাধ। বিচারাধীন ষোড়শ সংশোধনীর মামলা নিয়ে তার এ কটূক্তিমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
এভাবে আফসান চৌধুরী শিষ্টাচারবহির্ভূতভাবে প্রধান বিচারপতির নাম উল্লেখ করে ষোড়শ সংশোধনী, হেফাজতে ইসলাম বিষয়ে বিভ্রান্তিমূলক, আদালত অবমাননাকর, মানহানিকর পোস্ট ফেসবুকে প্রচার করেন। প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে এ ধরনের কটূক্তি অপপ্রচার দেশ ও জাতির জন্য লজ্জাকর বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এ জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের বিধি মোতাবেক আফসান চৌধুরীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আবেদন জানান নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী।
ইতোপূর্বেও আফসান চৌধুরী একজন সাবেক সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সাবেক রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অপপ্রচার চালিয়েছেন। পরে ওই কর্মকর্তা গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেন।
আইনি নোটিশে আরো বলা হয়, এ নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন তাকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় গ্রেফতার করা হবে না এবং গুলশান থানায় দায়ের করা সাধারণ ডায়েরির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পূর্বক কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। যথা সময়ে এ নোটিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও আইনজীবী তার নোটিশে উল্লেখ করেন।
একদিকে ফেসবুকে পেজ খুলে সেখানে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে উদ্দেশ্য করে মিথ্যা, বানোয়াট, উস্কানিমূলক ও বিচার বিভাগের জন্য অপমানকর লেখা প্রকাশ করায় ৪ জুন শাহবাগ থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের কোর্ট কিপার মো. আবু বক্কর সিদ্দিক।
শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) মো. জাফর আলী জানান, সুপ্রিম কোর্টের কোর্ট কিপার মো. আবু বক্কর সিদ্দিক মূল এজাহারের সঙ্গে ওই ফেসবুক পেজের চার পৃষ্ঠার স্ক্রিনশট যুক্ত করে দেওয়ায় তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলাটি রুজু হয়েছে। মামলা নম্বর ৭। এখন বিষয়টি তদন্ত হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন