প্রধান বিচারপতির সব ধরণের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা
চলমান বিতর্কে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সব অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি।
তিনি বলেন, ‘রায়ের মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক ও অগণতান্ত্রিক বক্তব্য প্রত্যাহারে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে যে সময় দিয়েছিলাম, আজ তা শেষে হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে ঈদের ছুটি শুরু হচ্ছে, খুলবে আগামী ৩ অক্টোবর। এ সময়ে আন্দোলনকে ফলাফলের দিকে নিতে হবে।’
উপস্থিত আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তাপস বলেন, ‘আমরা এসকে সিনহার সব কর্মকাণ্ড, কর্মসূচি অবশ্যই বর্জন করব, প্রত্যাখ্যান করব এবং পরিহার করব। কোনো আইনজীবী তার (প্রধান বিচারপতির) কোনো কর্মসূচিতে যাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেননি। ফলে সামনের দিনে তার বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন হবে এক দফা।’
ক্ষমতাসীন দলের এই এমপি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। তিনি এখন এই পদে আসীন থাকতে পারেন না। একজন বিচারপতি তার বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার সময় আরেকটি সাংবিধানিক পদের কাউকে অব্যাহতি করার যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন, সেটা শপথ ভঙ্গ শুধু নয়, রাষ্ট্রদ্রোহীতার শামিল। আমরা আশা করছি, বিচারপতির কোড অব কনডাক্ট মেনে তিনি অচিরেই তার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দাবি করছি আপনি (প্রধান বিচারপতি) পদ ছেড়ে চলে যান। তা না হলে আগামী অক্টোবর থেকে আপনাকে সরাতে দেশব্যাপী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
সমাবেশে আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘এসকে সিনহা যে কর্মসূচিতে যাবেন, সেটি আমরা পরিহার করব। প্রধান বিচারপতি কথায় কথায় ভারতের উদাহরণ দেন। সেই ভারতের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় তাদের সংসদ বাতিল করে দিয়েছে। সংসদ মনে করলে তার রায় বাংলাদেশেও বাতিল হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান বিচারপতি মেলা ফাইড (অসৎ) কাজ করেছেন। রায়ের একটি জায়গায় বেশ আপত্তিকর কথা বলা হয়েছে। যে ‘রাষ্ট্রপতি’ কথাটা লাগানো নাকি আল্ট্রা ভায়ার্স হয়েছে। তাহলে রাষ্ট্রপতির উপরে কি প্রধান বিচারপতি বসতে চান? সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনি (এসকে সিনহা) রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাকেও কেড়ে নিতে চান? রাষ্ট্রপতির বিষয় যেখানে ছিল না, সেখানে তাকে টেনে আনায় আপনার মেলা ফাইড আমাদের কাছে পরিষ্কার। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই- মানুষের ভাষা বুঝতে হবে। সারাদেশের মানুষের আবেগ বুঝতে হবে। সংবিধানে অপ্রাসঙ্গিক, অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত যেসব মন্তব্য রয়েছে তা বাতিল করতে হবে। বাতিল না হলে যে পরিণতি হবে, তার দায় আপনাকেই বহন করতে হবে।’
সংগঠনের আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, নূর ইসলাম সুজন, আইনজীবী লায়েকুজ্জামান মোল্লা, আইনজীবী আজহারুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন