প্রধানমন্ত্রীর অনলাইন কর্মকাণ্ড প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি
গত বছরের তুলনায় গত আট মাসে ভিডিও কনফারেন্স বা অনলাইন প্লাটফরমে সরকারি কর্মকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে রাতারাতি এই সব বৈঠক বা যোগাযোগ সরাসরি না হয়ে, এর পরিবর্তে অনলাইনে বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হচ্ছে।
পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ২০২০ সালে ৪৭৫টি ভিডিও কনফারেন্সে অংশ গ্রহণ করেছিলেন, সেখানে গত ৮ মাসে তার এই অনলাইন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৮৩টিতে। ’
তিনি আরও বলেন, এই মহামারি দ্রুত বিস্তার লাভ করায়, প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি যোগাযোগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে।
তার অধিকাংশ বৈঠকই ছিল অতি-গুত্বপূর্ণ অথবা সরকারের নির্বাহী সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট।
হোসেন আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই অনলাইন কর্মকাণ্ডের কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত সম্পাদন তরান্বিত হয়েছে। তিনি এই অনলাইন যোগাযোগ ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কর্মকর্তা এবং তৃণমূল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় পর্যায়ের আইনপ্রণেতাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ১৫৫৮টি স্থানে অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যোগাদান করেন-সেখানে তিনি জন-প্রতিনিধি, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন।
মহামারিকালে প্রধানমন্ত্রী অনলাইনের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান ও প্রধান প্রধান বৈশ্বিক কনফারেন্সেও অংশ নেন-যেগুলোতে আন্তর্জাতিক নীতিমালা নির্ধারণ করা হয় এবং তা বিশেষত বাংলাদেশ ও অন্যান্য অনগ্রসর দেশগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট।
মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, দেশের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের সাথে তার জুম মিটিংগুলো প্রত্যন্ত অঞ্চলের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য জাতি গঠনমূলক কর্মকা-সহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে দিক-নির্দেশনা প্রদানে সহায়ক হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এটি আমাদের মতো মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং আরো জুনিয়রদের দেশের শীর্ষ সরকারি অফিসের সাথে এক কাতারে সামিল করেছে। এটা দায়িত্ব পালনে আমাদের উজ্জীবিত করছে।
পিএমও সচিবের মতে প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সাল থেকেই সরাসরি বৈঠকের পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন বৈঠকে অনলাইনে যোগদান করছেন এবং ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬৯৬টি ভিডিও কনফারেন্স করেন।
বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম তিন জন কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত করা হয়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালের ২৬ মার্চ থেকে ২০২০ সালে ৩০ মে পর্যন্ত প্রথম লকডাউন আরোপ করে।
করোনার প্রকোপ পুনরায় বেড়ে যাওয়ায় সরকার ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ফের সামাজিক দূরত্ব ও চলাফেরায় নিয়ন্ত্রণ ও কিছু স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলাসহ চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে।
আর এর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় লকডাউন আরোপ করা হয়।
কিন্তু করোনাভাইরাস পুনরায় আরো শক্তিশালী হয়ে প্রাণঘাতী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট রূপে ফিরে এসেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত বিরতি দিয়ে ১ জুলাই থেকে পুনরায় দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন বা শাটডাউন আরোপ করা হয়েছে। সূত্র: বাসস
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন