‘প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এইচএসসিতে পরিবর্তন আসছে’
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সম্ভাব্য এ পরিবর্তনে কাজ হবে। আগামী বছর আরও বড় পরিবর্তন আনা হবে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনে (এফডিসি) সুবিধাবঞ্চিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নবম জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ‘বিতর্ক বিকাশ’-এর গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক, এটিএন বাংলা ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি যৌথভাবে এ বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সারাদেশে ৫২টি মামলা হয়েছে এবং তাতে ১৫৩ জনকে গ্রেফতার করার কথাও জানান নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভার পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন, এ পর্যন্ত ৫২টি মামলা হয়েছে, ১৫২ জনকে আটক করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এ পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলেও এ প্রক্রিয়া চলতেই থাকবে।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষা পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হবে।’ এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমি শিক্ষক, অভিভাবকসহ সবার সহযোগিতা চাই। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেন। যারা বাধার সৃষ্টি করে তাদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে সোপর্দ করেন।’
শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্নপত্র ফাঁস সমস্যার সমাধানের বিষয়ে বলেন, ‘সেটা আমাদের হাতে না, কাজটা করতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। তারাও আমাদের সঙ্গে আছে। সব মিলিয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে বিভিন্ন প্রস্তাব পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারপরও কোনও না কোনও জায়গা থেকে প্রশ্ন বেরিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি। (আগামী এইচএসসি পরীক্ষায়) বড় পরিবর্তনে যাবো না, সেখানেও কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছি যেগুলো আগে নিইনি। এতে আশা করছি, সেটি বেশি কার্যকর হবে। এর পরের পরীক্ষায় আরও বড় ধরনের পরিবর্তন আনবো।’
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এর আগে জানিয়েছিলেন, যে পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র ছাপানো ও বিতরণের প্রয়োজন হবে না, তেমন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আর তাহলেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সুযোগ থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ডা. মুহাম্মাদ মুসা, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির পরিচালক ড. শফিকুল ইসলাম এবং এটিএন বাংলার উপদেষ্টা নওয়াজীশ আলী খান বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে জাতীয় পর্যায়ের কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনাল শেষে গ্রান্ড ফাইনালে মুখোমুখি হয় বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জের রাশেদ খান মেনন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নথপুরের ইসহাকপুর পাবলিক হাই স্কুল। এবারে সারাদেশের মোট ৮৮০টি স্কুলের ১৭ হাজার ৬০০ বিতার্কিক অংশগ্রহণ করেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন