দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে যে অবস্থা বিরাজ করছে, কোনো দেশ এভাবে চলতে পারে না। প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করা শিক্ষামন্ত্রীর একার দায়িত্ব নয়। প্রশ্নফাঁস রোধ করতে হলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আরও সচেতন এবং দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ দেন দুদক চেয়ারম্যান।

বুধবার দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি বন্ধ না হলে অচিরেই আমাদের উন্নয়ন থমকে যাবে। দুর্নীতির কারণে অনেক দেশ এগিয়ে যেতে পারেনি। শুধুমাত্র মামলা করে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। আমরা অনেক ক্ষেত্রে মামলা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে ঘুষ লেনদেন বন্ধ হয়েছে আমি বলব না। তবে বন্ধ হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে আমাদেরকেই সাবধান হওয়া প্রয়োজন। অনেকেই বলেন, দেশে কর্মসংস্থানের অভাব। আমি বলছি, কোনো অভাব নেই। কারণ চাকরি করার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন লোকের অভাব। শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে এ ধরনের উপায় অবলম্বন করলে আগামী প্রজন্ম কীভাবে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমি শিক্ষামন্ত্রীকে বলেছি প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে আমাদের কী করণীয় বলবেন, আমরা তাই করব। প্রয়োজনে পরীক্ষার আগে ৬৪ সেট প্রশ্নপত্র অনলাইনে ফাঁস করা হবে। তবে পরীক্ষার ৫ মিনিট পূর্বে কেন্দ্র সচিবকে নির্দেশনা দেয়া হবে কোন সেটে পরীক্ষা নেয়া হবে। তাহলেই বোঝা যাবে মেধার অবস্থান। তিনি বলেন, আমরা প্রভাবমুক্ত সমাজ ও প্রশাসন চাই। তাহলেই সবক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত হবে এবং সুন্দর সমাজ গঠন হবে।

সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে মাঠপর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধবিষয়ক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মণ্ডলের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক জাফর ইকবাল, চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তার, উপপরিচালক (জনস্বাস্থ্য) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য, চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মিজি, শাহরাস্তি পৌর মেয়র হাজী আব্দুল লতিফ, মতলব দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা তালুকদার, সনাক সভাপতি কাজী শাহাদাত, সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা অভিষেক দাস, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক ডা. ইলিয়াছ, শহরের গৌর-এ-গরীবা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুর রশিদ তালুকদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক আব্দুল কুদ্দুছ ও শাহরাস্তি থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান।