ফরিদপুরে দুই বাসের সংঘর্ষ, নিহত ৫

হতাহতদের বেশিরভাগ ইটভাটা শ্রমিক, ফিরছিলেন কাজে
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-আহতের বেশিরভাগই ইটভাটার শ্রমিক ছিলেন। ছুটি শেষে কর্মক্ষেত্র ঢাকার সাভারের আমতলী এলাকায় ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে ফরিদপুর সদরের মল্লিকপুর এলাকায় কমিরপুর জোড়া সেতু এলাকায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত ও নয়জন আহত হওয়ার এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা সবাই সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে সাভারের আমতলী যাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলে ঢাকা থেকে ঝিনাইদহগামী গ্রিন এক্সপ্রেস বাসের সঙ্গে সাতক্ষীরা থেকে আমতলীগামী ওই বাসের সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা থেকে সাভারের আমতলীগামী বাসের চারজন এবং গ্রিন এক্সপ্রেসের এক যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর দুইজন ছাড়া বাকি সাতজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত ওই দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী ইউনিয়নের পূর্ব কৈখালী গ্রামের মো. সিদ্দিক গাজীর ছেলে নূর আলম গাজী (২৮) জানান, তারা সবাই সাভারের আমতলী এলাকার বিভিন্ন ইট ভাটায় চুক্তিভিত্তিকভাবে কাজ করেন। যখন যে ভাটায় কাজ থাকে সেখানেই কাজ করেন তারা। গত কয়েকদিন আগে ছুটিতে তারা নিজেদের বাড়ি সাতক্ষীরায় যান। ছুটি শেষে ৪০ জন শ্রমিক মিলে ৩২ হাজার টাকায় একটি বাস রিজার্ভ করে তারা কর্মস্থলে ফিরছিলেন। পথে এ দুর্ঘটনার ঘটে।

ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত আরেক ইটভাটার শ্রমিক একই গ্রামের জব্বার মালির ছেলে রানা মালি (২৯) জানান, দুর্ঘটনার সময় তারা সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। কীভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটল তা তার জানা নেই।

করিমপুর হাইওয়ে পুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহউদ্দিন চৌধুরী জানান, গ্রিন এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসটি বাম দিক থেকে সড়কের মধ্যরেখা অতিক্রম করে ডান দিকে (রং সাইড) চলে যায়। এতে সাতক্ষীরা থেকে আমতলীগামী বাসের সঙ্গে সেটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এখনো এ দুর্ঘটনায় নিহত কারও পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

নিহতদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে একজন হলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সাফায়াত গাজীর ছেলে আবু বক্কর গাজী (৫৫) ও অপরজন বাবু মোড়লের ছেলে ঈসা মোড়ল (৪০)। অন্য তিনজনের পরিচয় শনাক্তে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহ্ উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুর কোতোয়ালি থানাধীন মল্লিকপুর এলাকায় ঢাকা থেকে ঝিনাইদহ অভিমুখী গ্রীন পরিবহন এবং ঝিনাইদহ থেকে বরিশাল অভিমুখী খাগড়াছড়ি পরিবহনের মুখামুখি সংঘর্ষে উভয় পরিবহনের ৫ জন নিহত ও ২৩ জন আহত হয়েছেন।