ফাঁক-ফোঁকড় এবং অজুহাতে বাইরে মানুষ
ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত মেধা ও জ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল উন্নত সোনার বাংলা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল। তবে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ভেংগে পড়ছে দেশের অর্থনৈতিক সম্মৃদ্ধি। করোনা সংক্রমনরোধে সরকারি লকডাউন চলছে। সাধারণ মানুষ লকডাউন মানছে। তবে খাদ্যের অভাবে মানুষকে বাইরে বের হতে হচ্ছে। সরকারিভাবে বরাদ্দ থাকলেও সঠিকভাবে তা মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। দিনমজুর, ভ্যানচালক ও দরিদ্ররা বলছে, ‘রাস্তায় সেনাবাহিনী নেমেছে, কিচ্ছু বলবে না। তারাও বোঝে মানুষের দুঃখ-কষ্ট।’ এভাবে বলছে শহরের খেটে খাওয়া মানুষজন। তারা বলছেন ‘দেশের চলমান কঠোর লকডাউন প্রতিপালন নিশ্চিত করতে সাধারণ পথচারিদের সচেতনা করছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ-বিজিবিসহ অন্যান্যদের মানুষ মানছে না, তাই সেনাবাহিনীর সদস্যরা ‘করোনা ভাইরাস’ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে সচেতন এবং দেশকে রক্ষায় কাজ করছে। আমরা সবায় মিলে যদি সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালন করি তাহলে এই মহামারী থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। তবে সেনাবাহিনী রাস্তায় টহল দিচ্ছে দেখে মানুষজন আগের চেয়ে বেশি সচেতন হচ্ছে। রাস্তায় প্রয়োজন ছাড়া মানুষ খুব কমই বের হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অলিগলিতে আড্ডা দিচ্ছে অনেকেই। বাইরের বের হলে প্রশাসনের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। তারপরেও বিভিন্ন ফাঁক ফোঁকড় এবং নানান অজুহাতে বাইরে বের হচ্ছে মানুষ। এ বিষয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘যদি কেও ইমার্জেন্সি কারণ দেখাতে পারেন তাহলে আমরা তাদের ছেড়ে দিচ্ছি। কিন্তু যদি তারা কারণ না দেখাতে পারে তাহলে তাদের বাসায় ফিরিয়ে দিচ্ছি।’
জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ-বিজিবিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে করোনার বিস্তাররোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে একদিন বাজার না করলে হাড়িতে ভাত থাকে না এমন কিছু পরিবারকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট’র উপস্থিতিতে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদান করার জোর দাবী অসহায় মানুষের। কাঁচা বাজার ও মাছ-মাংস কেনা এখন স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে যেসব পরিবারের। আসুন আমরা প্রতিবেশির অধিকার রক্ষা করি। অসহায়, দুঃস্থ, হতদরিদ্র, মধ্যবিত্ত পরিবার এবং কর্মহীন মানুষের সহায়তা করি।
দেশের সকল হাসপাতালে জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সচেতন মহলের দাবী ‘করোনার বিস্তাররোধে প্রান্তিক পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।’ বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় অক্সিজেনের অভাবে করোনা পজেটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর প্রকাশ হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং মাঠ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করছে। সাতক্ষীরা, খুলনা এবং বগুড়ায় করোনাভাইরাসের রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েও অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন রোগীর আত্মীয়-স্বজন। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। দেশের অধিকাংশ হাসপাতাল গুলোতে সয়ংপূর্ণ আইসিইউ নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ব্রিফিংয়ে বল হয়েছে যে, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে পরিপূর্ণ আইসিইউ ইউনিট রয়েছে মাত্র ১১২টি। এখানে স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিইউ বলতে বোঝানো হয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ নিবির পর্যবেক্ষণ ইউনিটকে। যেখানে বিশেষ ধরণের শয্যা, কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ভেন্টিলেটর, টিউব, পাম্প, হার্টরেইট, বøাড প্রেসারসহ অন্যান্য শারীরিক পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক চিত্র পাবার মনিটরসহ নানা আধুনিক মেডিকেল সরঞ্জাম থাকে। বিশেষজ্ঞ দক্ষ জনবল লাগে আইসিইউ পরিচালনা করার জন্য। যাদের প্রত্যেকের প্রয়োজন বিশেষ সুরক্ষা পোশাক।’ অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও সেসব অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
করোনার ভয়াবহ অবস্থায় আমরা এখন বিশ্বের মধ্যে ৩০তম অবস্থানে আছি। এখনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পরিবর্তন প্রয়োজন। আইসিইউ না হোক অক্সিজেন সাপ্লাই নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভ‚মিকা প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুরু হয়েছে, স্থানীয় সংসদ সদস্যদের এ বিষয়ে কার্যকর দায়িত্ব পালন করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় অনলাইন কার্যক্রম কার্যকর হচ্ছে না, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও জেলার শিক্ষা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। অতি-দরিদ্র এবং দুস্থ মানুষের মাঝে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত এবং জনসচেতনা বাড়াতে হবে। মহামারী করোনার ভয়ংকর বিস্তাররোধে ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়াল এবং সাপোর্টিং জনবল নিয়োগ ও সেবার মানসিকতা বাড়াতে হবে। হাসপাতালগুলোতে অকেজো যন্ত্রপাতিগুলো দ্রæত মেরামত এবং ডাক্তারদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে করা প্রয়োজন। অধিকাংশ ডাক্তার ব্যস্ত থাকেন নিজস্ব ক্লিনিক বা অন্যান্য বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে। আমাদের এই সকল সমস্যা সমাধানে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পুলিশ, ডাক্তার এবং সাংবাদিক মধ্যে পরস্পারিক সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন