ফোনে নিষেধাজ্ঞা, বন্ধ হল শাকিবের ‘নোলক’

আলোচিত ‘নোলক’ সিনেমায় শুটিং করতে শাকিব খানকে মৌখিক নিষেধ করেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার। ফোন করে শাকিবকে এ ছবির কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ছবির পরিচালক রাশেদ রাহা গত ২২ জুলাই ছবিটি থেকে তাকে বাদ দেওয়ার বিচার চেয়ে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন সমিতিতে। আগামী পয়লা সেপ্টেম্বর সমিতিতে এ বিষয়ে সভা হবে এর আগে এই ছবির কাজ করা যাবে না।

গুলজারের মৌখিক নিষেধাজ্ঞার ফলে শাকিব খান ছবির কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। ফলে আবারও আটকে গেল শাকিবের ‘নোলক’ ছবির কাজ। গত বছরের ডিসেম্বরে এই অভিনেতার কাজ শুরু করা ‘নোলক’ ছবিটির শুটিং মঙ্গলবার তেজগাঁয়ের কোক স্টুডিওতে ফের শুরু হলে আবার বাধার মুখে পড়ে বন্ধ হয়ে যায় ছবির কাজ।

এর আগে টানা ৩২ দিন নোলকের শুটিং চলে ভারতের রামুজি ফিল্ম সিটিতে। তখন ছবির ৮৫ ভাগের বেশি শুটিং শেষ হয়। প্রায় সাত মাস বিরতি দিয়ে শেষ পর্যায়ে ‘নোলক’ ছবির পরিচালনা থেকে বাদ পড়লেন পরিচালক রাশেদ রাহা। গত ২১ জুলাই থেকে ‘নোলক’ ছবির শুটিং চলে কলকাতায়। রাশেদ রাহাকে বাদ দিয়ে শুটিং করেন পরিচালক ইফতেখার চৌধুরী।

বিষয়টি জানতে পেরে শেষ লটে এসে ‘কেন পরিচালনা থেকে বাদ গেলেন?’ অন্য পরিচালক দিয়ে কেন শুটিং করা হচ্ছে? এ নিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে গত ২২ জুলাই বিকালে একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন রাশেদ রাহা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আবার বন্ধ হয়ে গেল শাকিবের ‘নোলক’ ছবির কাজ।

এ বিষয়ে রাশেদ রাহা বলেন ‘নোলক’ ছবির প্রায় ৮৫ ভাগ শুটিং শেষ করার পর হঠাৎ এই ছবির প্রযোজক সনেট আমাকে বাকি অংশের শুটিংয়ের জন্য পরিচালক ইফতেখার চৌধুরীর সঙ্গে পরামর্শ করতে বলেন।

ছবির নির্মাণ কৌশল ও গোপনীয়তা বজায় রাখার স্বার্থে কারও সঙ্গে পরামর্শ করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারি, আমাকে ছাড়াই পরিচালক ইফতেখার চৌধুরীকে দিয়ে ‘নোলক’-এর বাকি অংশের কাজ করার জন্য প্রযোজক সনেট ২১ জুলাই কলকাতায় পৌঁছেছেন। পরিচালক সমিতিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২২ জুলাই একটি আবেদন জমা দেই। কোনো ছবি থেকে একজন পরিচালককে যদি স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বাদ দেওয়ার ট্রেন্ড চালু হয়ে যায় তাহলে নতুন নির্মাতারা আর ভয়ে নির্মাণে আসবেন না।’

এ বিষয়ে শাকিব সনেট বলেন ‘নোলক’ ছবির মুক্তির সময় নির্ধারণ করেছিলাম পয়লা বৈশাখ। নির্মাতা রাশেদ রাহা ছবিটি নির্মাণের শুরু থেকেই নানা গড়িমসি করতে থাকে। এতে আমার অর্থ ও সময় দুইই নষ্ট হয়। বৈশাখে ছবিটি মুক্তি দিতে পারিনি। এরপর ঈদে মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম। রাশেদের গাফিলতির কারণে তাও পারিনি। গত ২৮ জানুয়ারি তার কাছ থেকে একটি লিখিত পত্র নিয়েছিলাম।

তাতে তিনি নিজেই লিখে দিয়েছিলেন বৈশাখের আগেই ছবির কাজ শেষ করবেন। কিন্তু তা তিনি করেননি। প্রায় ৭/৮ মাস রাশেদ ছবির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রাখেন। তাকে ফোন বা অন্য কোনোভাবে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। শেষে বাধ্য হয়ে নিজেই ছবির নির্মাণ কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেই। তাতেও সে বাধা দেয়। এতে বারে বারে আমি শিল্পীসহ নানা শিডিউল জটিলতায় পড়ে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছি।’

বিষয়টি নিয়ে বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘রাশেদ রাহার অভিযোগপত্র পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ছবির প্রযোজককে বসার জন্য বারে বারে তাগাদা দিয়েছি। তিনি আসেননি। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দেননি। একজন নির্মাতাকে হুট করে বাদ দিয়ে অন্য নির্মাতাকে দিয়ে কাজ করানো যৌক্তিক হতে পারে না। এমন ট্রেন্ড চালু হলে নির্মাণে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।

পরিচালকের বিরুদ্ধে প্রযোজকের কোনো অভিযোগ থাকলে তিনি পরিচালক সমিতিতে জানাতে পারেন। সনেট সমিতিতে ‘মায়ার পাখি’ নামে একটি ছবি নির্মাণে সদস্য পদের জন্য আবেদন করলেও তাকে এখনো সহযোগী সদস্যপদও দেওয়া হয়নি। এখন শুনছি তিনি ‘নোলক’ ছবি পরিচালনা করছেন। তিনি যদি অযৌক্তিকভাবে নির্মাণে যান সহযোগী সদস্যপদও দেওয়া যাবে না। ১ সেপ্টেম্বর সমিতির জরুরি বৈঠকে বিষয়টির সুরাহা করা হবে।’