‘বঙ্গবন্ধু নিজের গোলার ধান গরিব-দুঃখীদের মাঝে বিলিয়ে দিতেন’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানবদরদি ছিলেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজের গোলার ধান বের করে নির্দ্বিধায় গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিতেন। বঙ্গবন্ধু নিজের বই গরিব ছাত্রদের মাঝে বিলিয়ে দিতেন। স্কুলে যাওয়ার সময় নিজের ছাতা অন্যকে দিয়ে দিতেন।
রবিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস ২০১৯ উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন একটি সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে। বাংলাদেশের মানুষ একটি উন্নত জীবন পাবে- এটিই তার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু সে কাজ তিনি করে যেতে পারেননি। ১৫ আগস্ট তাকে মেরে ফেলা হলো। আমি পরিবার ও আপনজন হারালাম; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ হারিয়েছিল তাদের স্বাধীনতার চেতনা ও উন্নত জীবন পাওয়ার সম্ভাবনা।
নিজের জীবনটাকে দেশ ও জনগণের জন্য উৎসর্গ করার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরে সবাইকে হারানোর পর সমৃদ্ধ-উন্নত দেশ গড়তে বাবার স্বপ্নপূরণ করতে ফিরে এসেছি। সেই সিদ্ধান্তের ওপরই আজো পথ চলছি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। আমি যখন বাংলাদেশে ফিরে আসি, আমি জানতাম যেকোনো সময় হয়তো আমার বাবার মতো ভাগ্য আমাকে বরণ করতে হবে। কিন্তু কখনও আমি মৃত্যু ভয়ে ভীত হইনি।’
১৫ আগস্ট হারানো স্বজন ও সেদিনের ঘটনার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘যখন বিদেশে গিয়েছিলাম তখন বিমানবন্দরে সকলে বিদায় দিয়েছিল। কিন্তু ফিরে এসে কাউকে পাইনি। পেয়েছিলাম বনানীতে এক সারি কবর, আর পেয়েছিলাম এখানে টুঙ্গীপাড়ায় আমার দাদা-দাদির কবরের পাশে শুয়ে আছে আমার বাবা।’
‘আমারও প্রতিজ্ঞা ছিল বাবার স্বপ্ন পূরণ করে এই বাংলাদেশকে উন্নত করে গড়ে তুলবো।’
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গঠনে, বিশেষ করে শিশুদের জন্য নেয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়কার বিভিন্ন কল্যাণকর কাজের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শিশুদের জন্য নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কার্যক্রমের কথাও উল্লেখ করে শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে গোপালগঞ্জ জেলা শহরের মালেকা একাডেমির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লামিয়া শিকদার। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধুকে লেখা চিঠি’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। বঙ্গবন্ধুকে লেখা শ্রেষ্ঠ চিঠি পড়ে শোনান যশোরের কেশবপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেলাই মেশিন বিতরণ করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী ‘আমার কথা শোন’ শীর্ষক ভিডিও প্রদর্শন ও জাতীয় কাব্যনৃত্যগীতি আলেখ্যানুষ্ঠান উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, গল্প বলা প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি প্রযোগিতা ও ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর শিশুদের ফটোসেশনে অংশগ্রহণ, বইমেলার উদ্বোধন ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের আঁকা ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক চিত্রপ্রদর্শনী পরিদর্শন করেন সরকারপ্রধান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন