বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্র সুরক্ষা’য় ব্যবস্থা চান মার্কিন আইনপ্রণেতারা

বাংলাদেশে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। চেয়ারম্যান এলিয়ট অ্যাঙ্গেলসহ ছয় সদস্যের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি দাবি করেছে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র হুমকির মুখে রয়েছে। এ হুমকি মোকাবিলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। নির্বাচনে জালিয়াতি ও ভোটারদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ নিয়েও উদ্বেগ জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে।

কড়া ভাষায় লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে— ‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থকে এগিয়ে নিতে সেখানকার গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকারকে সমর্থন দেওয়া জরুরি। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের যে খবর পাওয়া গেছে, তা এ গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থগুলোকে চরমভাবে হুমকির মুখে ফেলবে।’

এ বছরের আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মার্কিন আইনপ্রণেতারা বলেন, ওই নির্বাচনগুলোকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত অঙ্গীকার ও শ্রদ্ধাবোধের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সামনে আসা উচিত। সম্প্রতি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচন প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরার মধ্য দিয়েই এর সূচনা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা।

বাংলাদেশের দৃঢ় ও গৌরবময় গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে হাউস কমিটির চিঠিতে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রচারণার সময় সংঘটিত সহিংসতা, গণ-গ্রেফতার ও মুক্ত মতের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে দাবি করে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে হাউস প্যানেল। বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্রের সুরক্ষা’য় সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরও। তবে দক্ষিণ এশিয়ার বিশেষজ্ঞদের অনেকের বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী মনে করে ওয়াশিংটন। শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি অবলম্বন করেন এবং তার নেতৃত্বে দেশ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছে।

সম্প্রতি ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকার দিয়েছেন উড্রো উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলারস -এর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষক মাইকেল কুগেলমান। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির অস্থিরতা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র তাকে (শেখ হাসিনা) দেশের স্থিতিশীলতার সমর্থক ও চর্চাকারী হিসেবে বিবেচনা করে। ’

মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় মার্কিন কংগ্রেস ও ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকেও ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।