বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসায় বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির মতে, ‘উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশ উজ্জ্বল ব্যতিক্রম হয়ে থাকবে।’

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, করোনা সংক্রমণ ও আরও নানা কারণে ২০২২ ও ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে প্রবৃদ্ধি কমবে।তবে বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম। এখানে প্রবৃদ্ধি বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটন কার্যালয় থেকে পাঠানো ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২২’ বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

গত এক যুগ ধরেই বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা হচ্ছে বিশ্ব পরিমণ্ডলে। মুক্তিযুদ্ধের পর পশ্চিমা মূল্যায়ন ছিল এমন- বাংলাদেশ হবে বিশ্বের দারিদ্র্যের জাদুঘর। এই দেশে যদি উন্নয়ন সম্ভব হয়, তাহলে পৃথিবীর সব দেশেই উন্নয়ন সম্ভব।

তবে এই বাংলাদেশকে এখন বিশ্বের উদাহরণ হিসেবেই দেখাচ্ছে বিশ্বব্যাংসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো।

বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন এই মূল্যায়নের পেছনে রপ্তানি বাণিজ্যের পালে জোর হাওয়া, দেশীয় চাহিদা বৃদ্ধি, শ্রম আয় ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

দাতা সংস্থাটি বলছে, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রনের বাড়বাড়ন্তের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি হোঁচট খাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো বড় দেশের চাহিদা কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নশীল দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ করতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি আরও অনেক দিন থাকবে।

তবে বাংলাদেশের ২০২১-২২ অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারবে বলেই মনে করছে সংস্থাটি। তাদের আগের বছরের যে পূর্বাভাস ছিল, এবারও সেই ৬ দশমিক ৪ শতাংশ রেখেছে তারা।

অর্থনীতির বর্তমান গতিপ্রকৃতি বজায় থাকলে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার চলতি অর্থবছরের চেয়ে বেড়ে ৬ দশমিক ৯ হতে পারে বলে এ প্রতিবেদনে প্রাক্কলন করা হয়েছে।

বিশ্ব ব্যাংকের জুন পর্যন্ত প্রাক্কলনে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিষয়ে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত ব্যয় ও ভোগ বাড়ার পাশাপাশি সেবা খাতের কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং তৈরি পোশাকের ওপর ভর করে শক্তিশালী রপ্তানি আয় অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছে; যা প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি।

এ সময়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এবং জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ভারসাম্যের মুখোমুখি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশের পূর্বাভাস অপরিবর্তিত থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি বাড়ার প্রাক্কলন করেছে বিশ্ব ব্যাংক।তবে নতুন করে কোভিডের বিস্তারে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধীর গতি দেখা দিতে পারে বলে আভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২০২১ সালে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ভাইরাসের নতুন সংক্রমণে তা ২০২২ সালে ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে আভাস দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ২০২১-২৩ সময়ে অনেকটাই কমে আসবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। ২০১০-১৯ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ছিল ৪ শতাংশ, কিন্তু ২০২১-২৩ সালে তা কমে ২ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।