বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় যশ (YAAS), ভয়ঙ্কর তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস

বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় যশ (YAAS)। বর্তমানে এটি পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় যশ (YAAS) টানা ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা তাণ্ডব চালাতে পারে। এ সময় বাতাসের গতি ঘণ্টায় গড়ে ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

রোববার (২৩ মে) সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় যশ (YAAS) এর সবশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানোর সময় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি মূলত পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িষা ও বিহার উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশের খুলনা উপকূলেও আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে ঝড়টির।

বুধবার (২৬ মে) বিকেলের পর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানা শুরু করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে হয়তো ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে সুন্দরবনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের গতি কেমন থাকতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস বলেন, আঘাতের কেন্দ্রস্থলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি হতে পারে ঘূর্ণিঝড় যশ (YAAS) এর। তবে টানা ঝড় বয়ে যাওয়ার সময় গতি গড়ে ১৮০ কিলোমিটার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে এদিন দুপুরে আবহাওয়ার এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে আগামী বুধবার (২৬ মে) নাগাদ উড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় যশ (YAAS)।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি রোববার (২৩ মে) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

এটি আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সোমবার (২৪ মে) থেকে তীব্র তাপদাহ কমতে শুরু করবে। মঙ্গলবার (২৫ মে) স্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করবে। এরপর বুধবার (২৬ মে) বিকেল নাগাদ উত্তর উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে এলাকায় আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় যশ (YAAS) এখন পর্যন্ত সুপার সাইক্লোনের সম্ভাবনা নেই। তীব্র থেকে তীব্রতর ঘুর্ণিঝড় হতে পারে। বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছে খুলনা, সুন্দরবন এলাকা।