‘বাস ছিনতাই’ করে যাত্রী তুলে ডাকাতি করত তারা

রাজধানী উত্তরা পশ্চিম থানার আব্দুল্লাহপুর পেট্রলপাম্পের সামনে থেকে চাঞ্চল্যকর বাস ডাকাতির ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।

গত রোববার রাজধানী ও এর আশপাশ এলাকায় ধারাবাহিকভাবে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিম।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন— মো. নাইমুর রহমান ওরফে নাইম, মো. আবু জাফর ওরফে বিপ্লব, মো. সজিব মিয়া, মো. জহুরুল ইসলাম, মো. আলামিন, দিলীপ ওরফে সোহেল, আলামিন ও মো. শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া আজাদ।

গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৪টি চাপাতি, লোহার বাটযুক্ত ৪টি ছোরা, বিভিন্ন সাইজের ৫টি লোহার টুকরা রড, চোখ বাঁধার কাজে ব্যবহৃত ৩টি গামছা, বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন ১০টি, খেলনা পিস্তল ২টি ও নগদ ৯ হাজার ৮০০ টাকা জব্দ করা হয়।

একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, গত ২০ জানুয়ারি দিবাগত রাতে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) জনৈক মো. শফিকুল ইসলাম ও তার বন্ধু টাঙ্গাইল যাওয়ার উদ্দেশ্যে উত্তরা পশ্চিম থানার আব্দুল্লাহপুর পেট্রলপাম্পের সামনে থেকে আরকে আর পরিবহণ নামক একটি বাসে ওঠেন। বাসে ওঠার মিনিট দশেক পরে বাসে থাকা ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জনৈক ডাক্তার ও তার বন্ধুকে দুই হাত ও চোখ বেঁধে ফেলে।

ডাকাতরা ভিকটিমের নিকট থেকে থাকা ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, মোবাইলের বিকাশে থাকা ৫ হাজার ১০০ টাকা এবং ব্যাগে থাকা ২টি ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও পিন নিয়ে পরবর্তীতে আরও ১ লাখ ৬০ হাজার টাকাসহ মোবাইল ফোন ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। ডাকাতরা প্রায় ১২ ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা মহানগর ও আশপাশ এলাকা থেকে বাসে যাত্রী তুলে ডাকাতি করতে থাকে।

ডাকাতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃত ডাকাত দলটি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আরকেআর পরিবহণের বাসটিকে ভাড়ার কথা বলে সাভারের গেন্ডা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে ডাকাতরা প্রথমে বাসের ড্রাইভার ও হেলপারকে জিম্মি করে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এর পর নিজেরাই বাসটি চালিয়ে মহানগর এলাকার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে ঘুরতে থাকে এবং টার্গেট করে যাত্রী ওঠায়। পরে যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে, হাত-মুখ বেঁধে তাদের সাথে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে সকালের দিকে বিভিন্ন নির্জন স্থানে নামিয়ে দেয়।

জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ডাকাতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এই চক্রটি ঢাকা জেলার সাভার, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে একইভাবে ডাকাতি করে থাকে। ডাকাতদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ওই বাস ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে ডাকাতরা নিজেদের সম্পৃক্ত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি ডাকাতির মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।