বিআরটিসির এসি গাড়িতে ছাতা নিয়ে উঠতে হয় যাত্রীদের
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2017/08/manik-20170811203148-750x450.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
কী অবাক হচ্ছেন, গাড়ির ভেতরে যাত্রীরা ছাতা ধরে আছেন কেন? নাকি ভাবছেন, যাত্রীরা ছাতা নিয়ে ফ্যাশন করছেন? বিষয়টি আসলেই অবাক হওয়ার মতোই। মূলত যাত্রীরা গাড়ির এসির পানি থেকে রক্ষা পেতেই ছাতার আশ্রয় নিয়েছেন।
আর এই গাড়িটি হলো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি)। রাজশাহী-পঞ্চগড়-রাজশাহী রুটে চলাচল করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) এই গাড়িটি। গাড়ির নম্বর ৬৮০৩।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বিআরটিসির রাজশাহী কাউন্টারে যাত্রী হয়ে উঠেন ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তোরাব মানিক।
গাড়ি ছাড়ার কিছুক্ষণ পরই তিনি নিজ ফেসবুক ওয়ালে গাড়ির ভেতরে ছাতা ধরা কিছু ছবি পোস্ট করেন এবং সেখানে লিখেন “ভিন্ন কিছু ভাববেন না। বিআরটিসির এসি বাস রাজশাহী টু পঞ্চগড়। বাসের ভেতরে অনেকেই ছাতা নিয়ে বসে আছেন। আরো কতকী দেখবেন।”
তার এই স্ট্যাটাসে অনেকেই অনেক রকম মন্তব্য করেছেন। ফরহাদ হোসেন নামে একজন লিখেছেন (Fahod Hossain) হা হা হা, ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭/৮ বছর সময়টিতে এ অভিজ্ঞতা (ঠাকুরগাঁও-রাজশাহী, বিআরটিসির ছাদ দিয়ে পানি পড়া) নিত্যনৈমিত্তিক ছিল, আরেকটি হলো মাঝ পথে নষ্ট হওয়া …. লিখে।
Abu Shahanshah Iqbal লিখেছেন, বিআরটিসি-হরিপুর টু চাঁপাই নবাবগঞ্জ এই বাসে রংপুর গেলাম কদিন আগে। হঠাৎ বৃষ্টি, সংগে ছাতা ছিল না। সুতরাং যা হবার তাই হলো। আমি একা নয় বাসের সকল যাত্রীকেই , কোনো আপত্তি ছাড়াই ভিজতে হয়েছে। এমন কোনো সিট নেই যেখানে পানি পড়ে না। গাড়িটি এখনও এ লাইনে চলছে। যদি কেউ বিনে পয়সায় স্নান করতে চান তো বিআরটিসির যাত্রী হয়ে যান। শাবাশ বিআরটিসি, শাবাশ ফিটনেস।
এই প্রসঙ্গে কথা হয় যাত্রী আবু তোরাব মানিকে। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে এই যাত্রীর নিয়মিত যাত্রী আমি। তখন থেকেই ভিজছি। সমস্যা শুধু এসির না। গাড়ির প্রতিটি যন্ত্রাংশ নষ্ট। চাকাগুলোর বিট নেই। প্রতিদিনই নাকি পাংচার হয়। কিছুক্ষণ আগেও হয়েছে। দেড় ঘণ্টা ধরে ঠিক করা হলো।
তিনি আরও বলেন, অসংখ্যবার অভিযোগ করেছি, কোনো লাভ হয়নি। তাই এখন বাধ্য হয়ে ছাতা নিয়ে উঠি। রাজশাহী রুটে এটিই একমাত্র এসি গাড়ি হওয়ায় সকল ছাত্রী তাদের কাছে জিম্মি। শুনেছি রংপুরের ডিপো ম্যানেজারের বিআরটিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের খাতিরে মেরামতের বরাদ্দের টাকা লোপাট করে ফেলেন তিনি।
একই অভিযোগ করলেন বগুড়ার যাত্রী নাহিদ আল মালেক। তিনি বলেন, গাড়িতে যেহারে পানি পড়ে সেই হারে বাইরে পড়ে না। সরকারের একটি পরিবহন এটি, অথচ এত নাজুক অবস্থা ভাবায় যায় না।
রংপুরের যাত্রী মাহফুজ বললেন, এসি গাড়ি থেকে ছাতা নিয়ে নামতে দেখে লোকজন খুব হাসে। সরকারের উচিত এই পরিবহনটিকে টিপটপ রাখা। তিনি বিষয়টি দেখতে সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
গাড়ির সুপারভাইজার আব্দুল আউয়াল বলেন, গাড়ির সিটের পানি পড়ার সমস্যাটা রংপুর ডিপো ম্যানেজার মাসুদ আলমসহ সবাই জানেন। বেশ কয়েকবার মেরামত করার চেষ্টাও করেছি কোনো লাভ হয়নি।
তিনি বলেন, দুই বছর ধরে গাড়িটার এই সমস্যা। অর্ধেক সিটই পানিতে ভিজে যায়। এ কারণে যাত্রীরা ছাতা নিয়ে উঠে।
এ ব্যাপারে কথা হয় বিআরটিসির রংপুর ডিপোর ম্যানেজার মাসুদ আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, ছাতা নিয়ে গাড়িতে উঠতে এমন কোনো গাড়ি আমার ডিপোর অধীনে নেই। এটা অন্য কোনো রুটের গাড়ি হতে পারে।
গাড়ির সুপারভাইজার আব্দুল আওয়াল জানালেন এই গাড়িটি আপনার ডিপোর, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই নামে কোনো সুপারভাইজারকে আমি চিনি না। এ ব্যাপারে আমাকে জেনে আপনার সঙ্গে কথা বলতে হবে। জাগো নিউজের সৌজন্যে প্রকাশিত।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন