বিজয় দিবসে রাজাকারদের অতিথি করা যাবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বিজয় দিবসের কোনো অনুষ্ঠানে স্বাধীনতাবিরোধীরা নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। এমনকি অতিথি হিসেবেও থাকতে পারবেন না। আমরা বিগত সময়ে দেখেছি স্বাধীনতাবিরোধীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিজয় দিবস ২০১৭ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গৃহীত জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাশেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলা চেয়ারম্যান। গত বছর জিয়ানগরে বিজয় দিবসের প্যারেডে তিনি সালাম গ্রহণ করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সম্মাননা ও পুরস্কার তুলে দেন। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে একজন যুদ্ধাপরাধী ও চিহ্নিত রাজাকারের ছেলের উপস্থিতি নিয়ে তুমুল সমালোচনা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় জামায়াতের জনপ্রতিনিধিরা বিজয় ও স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সময় বিতর্ক উঠেছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি তরফ থেকে এবার নতুন নির্দেশনা এলো।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ সড়কপথে সাভার জাতীয় স্বৃতিসৌধে গমন ও প্রত্যাবর্তনকালীন নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী জানান, বিদেশি কূটনৈতিকদের বিশেষ টহলের মাধ্যমে সাভারে পুষ্পস্তবক অর্পণের ব্যবস্থা করা হবে। স্মৃতিসৌধ ও প্যারেড স্কোয়ারসহ প্রয়োজনীয় স্থানে পর্যাপ্তসংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। স্মৃতিসৌধ গমনের পথে এবং সারাদেশে কোনো ওভার হেডিং তোরন নির্মাণ করা যাবে না। এটি শুধু এই দিবস উপলক্ষে নয় যেকোনো সময়ের জন্যেও প্রযোজ্য। সৃতিসৌধ গমনের সময় ব্রিজের নিচেও নৌ-পুলিশের টহল থাকবে বলে জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিজয় দিবসে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে অনুষ্ঠানের সাত দিন আগেই নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে অবহিত করতে হবে। সন্ধ্যার পর কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ইনডোরে এই ধরনের অনুষ্ঠান করা যাবে। তবে সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে দিন শেষে যারা অনুষ্ঠান করবেন তারা ইনডোরে করবেন। তবে সন্ধ্যার পর কেউ আউটডোরে অনুষ্ঠান করতে চাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
মন্ত্রী জানান, স্মৃতিসৌধের পুরো রাস্তায় ১৪টি ওয়াটার ট্যাংক, পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য রেসকিউ ইকুইপমেন্ট নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা প্রস্তুত থাকবেন। সাথে অন্যান্য নিরাপত্তার বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত থাকবেন। হাতিরঝিল ও ধানমন্ডি এলাকায় যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা প্রস্তুত থাকবেন। তিনি জানান, বিগত যেকোনো সময়ের মতোই কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু কিশোর শোধণাগারে উন্নতমানের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, সাভার স্মৃতিসৌধ ও জাতীয় প্যারেডসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের নিকটবর্তী এলাকায় কোনো ধরনের সাউন্ডবক্স বাজানো যাবে না। সারাদেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে বিজয় দিবস ও এই জাতীয় অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় মেডিকেল টিম কাজ করবে। সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠানে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্লাগ রুলস অনুসায়ী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন