বিদেশি ইন্ধনে একের পর এক ব্যাংকে হামলা চালাচ্ছে কুকি-চিন!
সরকারের সঙ্গে দুই দফা মুখোমুখি শান্তি আলোচনার পরও বান্দরবানের রুমা এবং থানচিতে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি-চিনের দুর্ধর্ষ হামলার সঙ্গে বিদেশি ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছে।
আলোচনার শর্ত অনুযায়ী কুকি-চিনের সদস্যরা এলাকায় ফিরে আসার সুযোগ পেয়েছে। অন্যদিকে স্বাভাবিক হয়ে আসছিলো বান্দরবানের রুমা-আলিকদম-লামা এবং থানচির জীবনযাত্রা। কিন্তু পরিকল্পিতভাবেই দুদিনে একটি সরকারি ব্যাংকের টাকা ও অস্ত্র লুট, ম্যানেজারকে অপহরণের পাশাপাশি আরও দুটিতে হামলা চালিয়েছে। যা রীতিমত পাহাড়ি জনপদকে অশান্ত করার নতুন পরিকল্পনা বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে রুমায় ব্যাংক থেকে টাকা ও অস্ত্র লুট এবং বুধবার দুপুরে গুলি চালাতে চালাতে থানচির সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালিয়েছে বান্দরবান ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা। অথচ কথিত স্বায়ত্তশাসনের নামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা এই কুকি-চিনের সদস্যরা গত তিন মাসে দুদফায় সরকারের সাথে শান্তি আলোচনায় বসেছিল।
সর্বশেষ ৫ মার্চ রুমার এডেনপাড়ায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনার শর্ত অনুযায়ী স্বাভাবিক জীবনে ফিরছিল কেএনএফের সদস্যরা। গ্রামবাসীরা ফিরতে শুরু করায় আগের মতোই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছিলো পাহাড়ি পাড়াগুলো। কিন্তু গত দুদিনের দুটি উপজেলায় হামলায় আবারও অশান্ত হয়ে উঠছে বান্দরবান পার্বত্য জেলার পাহাড়ি জনপদ।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর অব. এমদাদুল ইসলাম বলেন, সেখানে কেন তারা এই ধরনের উস্কানিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যেটার ফলে তারা জানে যে তাদের যে শান্তি আলোচনা, সমঝোতা সবকিছু ভণ্ডুল হয়ে যাবে। এগুলি থেকে আমার মনে হয়, এখানে বাইরের কেউ ইন্ধন দিয়েছে কি না।
গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বান্দরবান পার্বত্য জেলার ৪টি উপজেলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো নাথান বমের নেতৃত্বাধীন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট। তিন পার্বত্য জেলার বিশেষ অংশ নিয়ে কথিত কুকিল্যান্ডের মানচিত্র এবং পতাকাও তৈরি করে সন্ত্রাসী সংগঠনটি।
বাংলাদেশ-মিয়ানমারের দুর্গম সীমান্তে চলছিলো কুকিচিনের গোপন প্রশিক্ষণ। এই সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে যোগ দিয়েছিলো জা-মাতুল আনসার ফিল হিন্দোল স্বকীয়ার সদস্যরা। টাকার বিনিময়ে এই জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলো সন্ত্রাসী সংগঠনটি। পরবর্তীতে রাবের টানা অভিযানে জঙ্গি সংগঠনটির ৫৫ জন সদস্যের পাশাপাশি কেএনএফের অন্তত ১৫ জন অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়। এরপরেই আলোচনায় বসতে রাজি হয় কেএনএফ।
মেজর অব. এমদাদুল ইসলাম বলেন, দেড় ঘণ্টা ধরে তারা রুমা সদরে ঘেরাও করে বসে আছে। সোনালী ব্যাংক লুট করছে, ম্যানেজারকে ধরে আনছে, মসজিদ থেকে একে ওকে খোঁজাখুঁজি করছে কিন্তু আশপাশে সেনা ক্যাম্পে একটা খবর দিবে না কেউ!
তিনি বলেন, ‘দেড় ঘণ্টা ধরে অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছে, আনসার-পুলিশের অস্ত্র লুট করেছে। এটা আমার কাছে অবাস্তব মনে হচ্ছে।’
প্রথম দফায় ৫ নভেম্বর রুমার মুনলাই পাড়ায় সরকারের সাথে আলোচনা শুরু করে কেএনএফ। ৫ মার্চের আলোচনা অনেকটা ফলপ্রসূ হওয়ায় আবারও আলোচনায় বসার আগ্রহ দেখিয়েছিল কেএনএফ নীতি-নির্ধারকেরা। যা রীতিমত পাহাড়ি জনপদকে অশান্ত করার নতুন পরিকল্পনা বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
সূত্র: সময় সংবাদ
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন