বিয়ের সময় এক মোহরানার নিকাহনামা বিচ্ছেদের পর আরেক মোহরানার নিকাহনামা দেন কাজী বেলাল হোসাইন

নওগাঁর রাণীনগরে বিয়ের সময় এক মোহরানা বিচ্ছেদের পর অর্থের বিনিময়ে আরেক মোহরানার নিকাহনামা দিয়ে প্রতারণা করে আসছে কাজী বেলাল হোসাইন নামের এক কথিত কাজী। কাজীর এই ধরণের শত শত প্রতারণামূলক কাজে প্রতারিত হয়ে অনেকেই আইনের আশ্রয়ে গেলে প্রভাবশালী কাজী বেলালের অর্থের দৌরাত্মের কাছে নায্য বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ।

তেমনি একজন প্রতারিত ব্যক্তি হলেন উপজেলার পশ্চিম বালুভরা গ্রামের মৃত-মনির উদ্দীনের ছেলে মহিদুল ইসলাম। সম্প্রতি মহিদুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে প্রয়াত এমপি ইসরাফিল আলমের শাসনামলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক কাজী বেলাল হোসাইনের এমন প্রতারণামূলক কর্মকান্ড। শুধু মহিদুল ইসলামই নয় আরো অনেক লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে আলোচিত কাজী কাজী বেলাল হোসাইনের নতুন ও পুরাতন নানা অবৈধ কর্মকান্ডের কাহিনী বেরিয়ে আসছে।

উপজেলার পশ্চিম বালুভরা গ্রামের মৃত-মনির উদ্দীনের ছেলে মহিদুল ইসলাম বলেন কাজী বেলাল হোসাইন উপজেলার ২নং কাশিমপুর ইউনিয়নের কাজী হলেও সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করে। সে অর্থের বিনিময়ে বিবাহ নিবন্ধনকালিন সময়ে মোহরানা বৃদ্ধি করেন। অনেক ক্ষেত্রে একই বিবাহ বিনা কারণে শুধুমাত্র মোহরানা বৃদ্ধির জন্য অর্থের লোভে একাধিকবার নিবন্ধন করেন।

তিনি জানান গত ২০২৪সালের মার্চ মাসের ০৭তারিখে তার ভাগিনা নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের সামছুল প্রামাণিকের ছেলে আনিসুর রহমানের সঙ্গে রাণীনগর উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের কাটরাশইন গ্রামের শাহানাজ মেম্বারের মেয়ের সঙ্গে ১,২০,০০০ টাকা মোহরানায় বিবাহ নিবন্ধন করেন কাজী বেলাল হোসাইন।

বিবাহের কয়েক মাস পর বিচ্ছেদের সময় কাজী বেলালের নিবন্ধন করা ৪,২০,০০০টাকা মোহরানার বিবাহ নিবন্ধন দাখিল করে মেয়ে পক্ষ। তখন একই বিবাহের ভিন্ন ভিন্ন মোহরানার বিবাহ নিবন্ধন দাখিল করায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম দ্ব›েদ্বর সৃষ্টি হয়। পরে উভয় পক্ষই আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের করার চেস্টা করছে।

তিনি আরো বলেন নানা অবৈধ কর্মকান্ডের কারণে বিগত সময়ে কাজী বেলালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে সে অর্থের মাধ্যমে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে নিজেকে বাঁচিয়ে নেয়। তার এই ধরণের কর্মকান্ডে বহু সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে এবং হচ্ছে। এছাড়া অনেক নিরীহ পরিবারে বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনাও ঘটছে।

সে নিজে এবং তার ভাই, পুত্র ও ভাগিনা দিয়ে নিজ এলাকার বাহিরে এমনকি দেশের বিভিন্ন স্থানে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বেআইনী ভাবে বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন করার কাজ চালিয়ে আসছে। তার দ্বারা শত শত মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। বছরের পর বছর এমন প্রতারণার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে কাজী বেলালের সকল কর্মকান্ড বন্ধ করে তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নেই।

এই বিষয়ে বক্তব্য নেবার জন্য কাজী বেলাল হোসাইন মুঠোফোনে (০১৭১৪৫২২৫৬৫) একাধিকবার ফোন দিলে তা রিসিভ না হওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

জেলা রেজিস্ট্রার মো: সাইফুল ইসলাম বলেন একজন কাজী তার এলাকার বাহিরে গিয়ে কাজ করার কোন ক্ষমতা রাখেন না। কাজী বেলাল হোসাইনের বিরুদ্ধে অনেকগুলো বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।