বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণ হলো ঠাকুরগাঁওয়ে মিলনের

অবশেষে অনিশ্চয়তা কাটিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে মিলন। প্রহর গুনে দেখা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সপ্ন পূরণ হলো তার।

শেষ মুহুর্তে বিষয়টি জানতে পেরে মিলনের ভর্তি সহ পড়ালেখার সব খরচ বহণের দায়িত্ব নেন, ঠাকুরগাঁও ১ আসনের সাবেক সাংসদ খাদেমুল ইসলামের ছেলে শাহেদুল ইসলাম সাহেদ।

সাহেদ বাংলাদেশের হয়ে দুবাইয়ে মিনিস্টার এন্ড ডেপুটি কনসাল জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও ঠাকুরগাঁওয়ের নিপীড়িত অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে বেশ সুনাম অর্জন করেছে তিনি। নিজ অর্থায়নে বিভিন্ন সামাজিক কাজ করে যাচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ফাজিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল সম্পন্ন করেছে মিলন। একই ইউনিয়নে পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা তিনি। মিলনের পিতা তমিজ উদ্দীন একজন প্যারালাইজড রোগী। দিনমজুর মা মমেজা খাতুনের উপরেই নির্ভর করে এই পরিবার।

তাই জন্মের পর থেকেই কষ্ট ও দারিদ্র্যতা দেখে এসেছে মিলন। বাস্তব জীবনে অভাবী সংসার নিয়ে সংগ্রাম করে আসলেও স্বপ্ন ছিলো কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার। সন্তানের স্বপ্ন পূরনে দিনমজুরি দিয়েই পড়ালেখা করিয়েছেন মা মমেজা খাতুন। ১০ টাকা ৫ টাকা করে মায়ের জমানো টাকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয় মিলন।

দারিদ্র্যতা মিলনের সফলতকে থামাতে পারেনি। সফলতার সাথে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভিত্তিক পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয় এবং রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তির সুযোগ পায়।

তবে এতদুর সন্তানকে নিয়ে আসলেও, এককালীন ভর্তির টাকা ও বাইরে রেখে পড়ালেখা করানোর বাড়তি টাকা ছিলোনা সেই মায়ের। তাই সুযোগ পাওয়ার পরেও টাকার অভাবে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় স্বপ্নের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে।

এ বিষয়ে মিলনের কাছে জানতে চাওয়া হলে সে বলে,আমি খুব খুশি আমার স্বপ্নের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে। আমি যখন ভর্তির টাকাটা জোগাড় করতে পারছিলামনা আমি খুব হতাশ ছিলাম। আমার ভর্তি তখন প্রায় অনিশ্চিত। ঠিক তখনি সায়েদ ভাই আমার জন্যে স্বপ্ন পূরণের সিঁড়ি হয়ে আসে। আমার ভর্তির সব খরচ সহ পরবর্তী সময়ে আমার পড়ালেখার সব খরচের দায়িত্ব নেন।

মিলনের মা মমেজা খাতুন বলেন, মিলন আমাদের একমাত্র সন্তান। অনেক কষ্টকরে ওকে বড় করেছি। খেযে না খেয়ে ওর পড়ালেখার ক্ষতি হতে দেইনি। তবে একটা সময় মনেহলো এবার হয়তো আর সমম্ভব হবেনা। ছেলের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।

শাহেদুল ইসলাম সাহেদ জানান, শোকের মাসে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবেরে স্বরণে একটি ভালো কাজে নিজেকে যুক্ত করার চেষ্টা করলাম। বাবার আদর্শ বুকে লালন করে জনসাধারণকে সাথে নিয়ে চলাই আমার লক্ষ। এই কাজ আমার অব্যাহত থাকবে। আরও কেউ এমন পরিস্থিতির শিকার হলে পাশে থাকার চেষ্টা করবো।