বেরোবিতে ড. নজরুল ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
এইচ. এম নুর আলম, বেরোবি প্রতিনিধি : রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) গণযােগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান ড. মো: নজরুল ইসলামকে ভর্তি জালিয়াতির সাথে ফাঁসানোর অপপ্রয়াস ও এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নকারিদের শাস্তির দাবিতে পৃথক দুটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বেলা পৌনে বারোটায় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ ও পৌনে একটায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল চত্তরে এ দুটি মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বেলা পৌনে বারোটায় শেখ রাসেল চত্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধেও চেতনায় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. মো: নজরুল ইসলামকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। ফাঁসানোর অভিপ্রায় নিয়েই গোপনে নিছক একটি অডিও ক্লিপ ধারণ করে সেটা মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ড. নজরুল ইসলাম ২০১৭-১৮ সালের ভর্তি পরীক্ষার বি ইউনিটের সমন্বয়ক ছিলেন। তাঁকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করে ভর্তি পরীক্ষা প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে ষড়যন্ত্রকারিরা। তাঁদের এ ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।
বক্তারা আরো বলেন, যারা ষড়যন্ত্র করেছে এবং অডিও ক্লিপ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়ে শিক্ষক, উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়কে বিতর্কিত ও সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করেছে তাদের বিচার করতে হবে, তা নাহলে এরা আবারো ষড়যন্ত্র করবে। যদি অপপ্রচারকারি ও ষড়যন্ত্রকারিদের শাস্তি না দেওয়া হয় তা হলে পরবর্তী সময়ে কেউ ইউনিটের সমন্বয়কের দায়িত্ব নিতে চাইবে না। ষড়যন্ত্রকারিদের শাস্তি না দিলে পরবর্তী কোনো পরীক্ষায় ইউনিট সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন না বলে মানববন্ধনে শিক্ষকের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনটির আহŸায়ক ও প্রযুক্তি ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবু কালাম মো: ফরিদ উল ইসলাম, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী মাজহারুল ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাফিউল আজম খান, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আর এম হাফিজুর রহমান সেলিমসহ অনেকেই। বক্তারা অবিলম্বে গঠিত তদন্ত কমিটির সঠিক প্রতিবেদন প্রত্যাশা করেন।
অপর দিকে দুপুর পৌনে একটায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একই জায়গায় একটি মানববন্ধনে বিভাগীয় প্রধানকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্রকারিদের মিথ্যা অপ্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন বিভাগটির বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা ড. নজরুল ইসলামের নাম ফাঁসিয়ে ফায়দা লুটানোর অপ্রয়াসকারিদের শাস্তির দাবি জানান। এ সময় বিভাগটির কয়েকশত শিক্ষার্থী মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় বি ইউনিটসহ অন্যান্য ইউনিটের সাক্ষাৎকারের সময় জালিয়াতির অভিযোগে সাতজন সাক্ষাৎপ্রার্থীকে আটক করা হয়। পরে বি ইউনিটের সাক্ষাৎকার দিতে আসা শিক্ষার্থীকে জালিয়াতির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় অন্যের প্ররোচনায় ও যোগসাজশে ড. নজরুল ইসলামকে ফাঁসানোর চেষ্টায় ঐ সাক্ষাৎকারপ্রার্থী শিক্ষকের নাম বলে দেয় বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে গোপনে ধারণ করা অডিও রেকর্ড মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। তবে অডিও রেকর্ডে জালিয়াতির বিষয়ে ড. নজরুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতার কোনো যথোপযুক্ত প্রমাণ না থাকলেও বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যম ও পত্রপত্রিকায় এ সংক্রান্ত তথ্য ভাইরাল হয়ে পড়ে।
অসৎ উদ্দেশ্যে ধারণ করা অডিও ক্লিপ ফাঁস করার মাধ্যমে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টার করার অভিযোগ এনে গত ২৬ ডিসেম্বর রংপুর কোতয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ড. নজরুল ইসলাম। এ মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছেও এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। ফলে ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় প্রশাসন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আজিজুর রহমানকে আহবায়ক করে তিন সদস্যেও একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করেন। এ দিকে প্রশাসনের করা মামলায় ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মহিব্বুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার রুলের কর্মচারি রায়হান চৌধুরী পিন্টুকে এক আন্টির সাথে যোগসাজশে শিক্ষকের নাম ফাঁসিয়ে মোটা অংকের টাকার হাতানোর জালিয়াতির ঘটনায় কারাগারে প্রেরণ করে।
ভর্তি জালিয়াতির ব্যাপারে গঠিত তদন্ত কমিটিকে দ্রæততম সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন