বেরোবিতে ভর্তি জালিয়াতি: দুইজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ
বেরোবি প্রতিনিধি : রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষ ভর্তিতে জালিয়াতির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় দুই আসামীর রিমান্ড আবেদন না মঞ্জুর করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার (১০ জানুয়ারি) রংপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা এই আদেশ দেন।
এর আগে পুলিশ সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে।
আসামীদ্বয় হলেন ভর্তিতে প্রক্সি দিয়ে মেধাতালিকায় প্রথম হওয়া শামস বিন শাহরিয়ার ও জালিয়াতির ঘটনার হোতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের মাস্টার রোলের কর্মচারী আহসান চৌধুরী পিন্টু।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) ও ঐ মামলার ইনভেস্টিগেশন অফিসার (আইও) মুহিব্বুল ইসলাম মুন।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগে আটক সাত শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতা ও এক অভিভাবককে আটকের পর কয়েকটি চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী আহসান চৌধুরী পিন্টুকে গত ২৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার) আটক করে পুলিশ।
বেরোবির ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে গত ২৬ থেকে ২৯ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার ও ভর্তির জন্য ১৭ ডিসেম্বর নির্ধারিত দিন ছিল। ওই দিন মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে ছয় শিক্ষার্থীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এই ছয়জন হলেন ‘বি’ ইউনিটের শামস বিন শাহরিয়ার, রিফাত সরকার ও সাদ আহমেদ, ‘সি’ ইউনিটের আহসান হাবীব ও শাহরিয়ার আল সানি এবং ‘এফ’ ইউনিটের রোকসান উজ্জামান।
একই দিন ক্যাম্পাসে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নেতাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে ভর্তি জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর জালিয়াতির দায়ে আরেক শিক্ষার্থী ও তার বড় ভাইকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
নেতা ও এক অভিভাবককে আটকের পর কয়েকটি চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকটি জালিয়াতি চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী আহসান চৌধুরী পিন্টুকে গত ২৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার) আটক করে পুলিশ।
১৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আবু কালাম মুহা. ফরিদ উল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এবং ২৮ ডিসেম্বর তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কিন্তু আটককৃত শিক্ষার্থী শামস বিন শাহরিয়ারের মোবাইলের কললিস্ট ও জিজ্ঞাসাবাদ রেকর্ড থেকে ভর্তি পরীক্ষায় এক আন্টি রহস্যে তোলপাড় শুরু হয়।
পুলিশ ঐ আন্টিকে ধরতে মরিয়া অভিযান চলালেও এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে বি ইউনিটের সমন্বয়ক ড. মো: নজরুল ইসলামের ভর্তি জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততা ও জড়ানোর অভিযোগ ও এ সংক্রান্ত ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছে গঠিত তদন্ত কমিটি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন