ভারতের জন্য তেলের দামে ৫ শতাংশ ছাড় ঘোষণা রাশিয়ার

যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারতের কাছে সস্তায় অপরিশোধিত তেল বিক্রি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এমনকি, ক্ষেত্রে দেশটি ৫ শতাংশ ছাড়ও দেবে বলে ঘোষণা করেছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
ভারতে রাশিয়ার উপ-ব্যবসায়িক প্রতিনিধি ইভগেনি গ্রিভা বলেছেন, তেল কেনার ক্ষেত্রে ভারতকে প্রায় ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। এটি অবশ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।
গ্রিভা আরও জানান, রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, ভারতের তেল আমদানি প্রায় একই স্তরে বজায় থাকবে। তিনি বলেন, ছাড়ের বিষয়টি বাণিজ্যিক গোপনীয়তার অন্তর্ভুক্ত। তবে সাধারণত এটি ব্যবসায়ীদের আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হয় এবং প্রায়শই ৫ শতাংশের আশেপাশেই থাকে।
এ সময় রাশিয়ার উপ-মিশন প্রধান রোমান বাবুশকিনও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এটি নিঃসন্দেহে ভারতের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি। তবে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কে আস্থা রয়েছে। আমরা নিশ্চিত যে বহিরাগত চাপ থাকা সত্ত্বেও ভারত-রাশিয়া জ্বালানি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে যে, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারত ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়ন করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। হোয়াইট হাউজের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেন, ভারত আসলে রাশিয়ার তেলের জন্য বৈশ্বিক ক্লিয়ারিংহাউজের ভূমিকা পালন করছে। তারা নিষিদ্ধ তেলকে রূপান্তর করে উচ্চমূল্যের পণ্য হিসেবে রপ্তানি করছে ও এভাবে মস্কোকে ডলার সরবরাহ করছে।
ভারত অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। নতুন মার্কিন শুল্কে ভারতীয় টেক্সটাইল, সামুদ্রিক পণ্য ও চামড়া রপ্তানির মতো খাতগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই স্পষ্ট করে বলেছেন, অর্থনৈতিক চাপের মুখে দিল্লি কোনোভাবেই পিছু হটবে না।
মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে নিরুৎসাহিত করতে ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে বারবার চাপ সৃষ্টি করেছেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য। এ লক্ষ্যে তিনি ভারতের ওপর শুল্কসহ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই যুদ্ধ দ্রুত শেষ হওয়া প্রয়োজন। অন্যদের প্রস্তাব মতো আরেক মাস অপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই।
যুক্তরাষ্ট্র আগেই সতর্ক করেছিল, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ না হলে রাশিয়ার ওপর যেমন নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে, তেমনি যারা রুশ তেল কিনছে তাদের বিরুদ্ধেও দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। বর্তমানে চীন ও ভারত রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
সূত্র: এনডিটিভি

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন