ভালো আছে তোফা-তহুরা, আজ বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবনের কৃষক রাজু মিয়া ও সাহিদা বেগমের ঘরে যমজ শিশু তোফা আর তহুরা জোড়া লাগানো অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়েছিল গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর। জন্মের পর থেকেই পিঠের দিক থেকে কোমরের নিচ পর্যন্ত মেরুদণ্ডের হাড় সংযুক্ত ছিল মেয়ে দুটির।

ফুটফুটে যমজ মেয়েদের নিয়ে নিদারুণ কষ্টে পড়েছিলেন রাজু-সাহিদা দম্পতি। তবুও হাল না ছেড়ে মেয়েদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তোফা-তহুরার বাবা ও মা। এরপর এক মাস দশদিন আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা জীবন পায় শিশু তোফা ও তহুরা।

তোফা-তহুরার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় জানানোর জন্য রোববার বেলা সোয়া ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তোফা-তহুরার বাবা রাজু আর সাহিদা বেগম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাহনুর ইসলাম, সংবাদ সম্মেলনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও হাসপাতালের পরিচালক একেএম নাসির উদ্দিনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক সাহনুর ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তোফা ও তহুরা ভাল আছে; অন্য শিশুদের মতো স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া করছে। গতকাল তোফা বসতে শিখেছে। তাদের আজই একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়ি পাঠানো হবে।

তবে তাদের আরও দুবার অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হবে জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরে দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। এখন তাদের পুনর্বাসনের প্রয়োজন। তাই তাদের বাবা-মার নামে ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খোলা হয়েছে।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তোফা ও তহুরার বাবা রাজুর জন্য একটি চাকরির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।

উল্লেখ্য, ১ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে দুই বোনকে আলাদা করেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের পর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের পাশের একটি কক্ষে প্রায় ২০ দিন রাখা হয় তোফা ও তহুরাকে। সে সময় সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে তাদের সম্পূর্ণ আলাদা কক্ষে রাখা হয়। তারপর তৃতীয় তলার একটি কেবিনে রাখা হয় তোফা ও তহুরাকে।