ভোট পেছালে আপত্তি করবে না আ.লীগ : ওবায়দুল কাদের
অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও জোটের দাবির প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটের তারিখ পিছিয়ে দিলে আপত্তি করবে না আওয়ামী লীগ। রোববার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি চলাকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পেছাবে কি-না পেছাবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচনের সিডিউল সংক্রান্ত সব বিষয় নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে।’
নির্বাচন পেছালে আওয়ামী বা ১৪ দল আপত্তি করবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। কমিশন নির্বাচন পেছাতে চাইলে আমরা কোনো আপত্তি করব না। দলীয়ভাবে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। নির্বাচন সংক্রান্ত প্রতিটা বিষয়ের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন এটাও বলেছে, সব দলের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।’
তবে তিনি বলেন, ‘সিডিউল পেছানোর সময়ের বিষয়টা এবং দাবি যৌক্তিক হতে হবে। সময় বাস্তবতার দিকে চেয়ে নির্বাচন কমিশন যথাযথভাবে সিদ্ধান্ত নেবে এটা আমরা প্রত্যাশা করি। আমরা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছি। দাবি অনেকেই করবে- সেটা সময়, পরিস্থিতি অ্যালাও করবে কি-না সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের।’
সাকিবকে খেলতে বলা হয়েছে মাশরাফিকে কেন নয় সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, মাশরাফি-সাকিব দু’জনের সঙ্গেই আমি কথা বলেছি। আমি তাদেরকে টাইম দিয়েছিলাম। কিন্তু সাকিব গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশের স্বার্থে খেলে যেতে। আর মাশরাফির বিষয়টা দীর্ঘদিন ধরে ভাবা হচ্ছে। সে নিজেও এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, একেএম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিতে পাঁচ বছর আগে নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি এবারও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করে আসছিল। পাশাপাশি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি ছিল তাদের।
কিন্তু এসব দাবির বিষয়ে সরকারের সাড়া না পেয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয় বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের দুই দফা সংলাপেও কোনো সমঝোতা হয়নি।
ঐক্যফ্রন্ট সমঝোতার আগে তফসিল ঘোষণা না করার দাবি জানালেও গত বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
ঘোষণা অনুযায়ী ২৩ ডিসেম্বর ভোটের দিন রেখে নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা এবং ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় রাখা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ওই তফসিলকে ‘ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছার প্রতিফলন’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। বিএনপির সাবেক নেতা বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টও নির্বাচন সাত দিন পেছানোর দাবি জানিয়েছে।
এরপর রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে নির্বাচনের প্রতীক কী হবে তা নির্ধারণ না হলেও নির্বাচনের দিনক্ষণ পেছানো ও সংলাপের বিষয়টি ফের উত্থাপন করেন মির্জা ফখরুল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন